একদিনের দুর্ভোগ কাটিয়ে ফের পুজোর আমেজে কলকাতা, জল নামিয়ে সুপার হিরো কলকাতা পুরসভা! কোন উপায়ে কাজ?...
আজকাল | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার রাত থেকে অঝোর বৃষ্টি। কয়েকঘণ্টার টানা বর্ষণে একপ্রকার ডুবে গিয়েছিল মহানগর। উত্তর, মধ্য, দক্ষিণ কলকাতা একপ্রকার জলের তলায় চলে গিয়েছিল। জলমগ্ন ছিল গোটা সল্টলেক চত্বর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকাও। মঙ্গলবার শহরের দিকে তাকালেই দেখা গিয়েছে, মানিকতলা থেকে মুদিয়ালি, সর্বত্র কোমর জল। ডুবে গিয়েছে রাস্তা-ঘাট। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি, অটো জলের তলায়। লাইনে জল জমে গিয়ে ব্যাহত ট্রেন, মেট্রো চলাচল। শহরবাসী মনে করতে পারছিলেন না, প্রতি বর্ষায় কম বেশি জলযন্ত্রণা হলেও, শেষ কবে এই পরিমাণ বৃষ্টির সাক্ষী থেকেছে শহর। কয়েকঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১০জনের।
মঙ্গলবার দিনভর পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন খোদ মেয়র, মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার অনেক রাত্রি পর্যন্ত পুরসভায় পারিষদ এবং আধিকারিকদের সঙ্গে ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেখান থেকেই নজর রেখেছিলেন গোটা ঘটনার উপর। অন্যদিকে জলযন্ত্রণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহরের সাধারণ মানুষ। মঙ্গল পেরিয়ে বুধে, ঝলমলে আকাশ। রোদ উঠেছে শহরের জানলায়। ২৪ ঘণ্টায় কতটা বদলাল পরিস্থিতি?
দুর্যোগের মঙ্গলবার পেরিয়ে রোদ উঠল, শহরের বেশিরভাগ জায়গায় নেমে গেল জল। ২৪ ঘণ্টায় কীভাবে অসাধ্য সাধন পুরসভার?
মানিকতলা- একাধিক পাড়া রাস্তা থেকে, মানিকতলা মোড় পর্যন্ত পৌঁছনো সম্ভব ছিল না কোনওভাবেই। চতুর্দিকের রাস্তায় হাঁটু জল, কোথাও জল কোমর পেরনো। মঙ্গলবার রাত থেকেই জল নামতে শুরু করে। বুধবার সকালে একেবারে খটখটে রাস্তা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। বুধবার সকালে ওই এলাকার পুজো মণ্ডপগুলিতে ফের কাজ শুরু হয়েছে নয়া উদ্যোমে। ভিড় মানিকতলা বাজারে, বাজার সংলগ্ন রাস্তায়।
দক্ষিণের বহু রাস্তা একেবারে সাফ-সুতরো। মঙ্গলবার ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিতে ব্যাহত হয় মেট্রো পরিষেবাও। মঙ্গলবার সকালে মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছিল, 'রাতভর ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে, মহানায়ক উত্তম কুমার এবং রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনের মাঝখানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য, শহিদ ক্ষুদিরাম থেকে ময়দান স্টেশনের মধ্যে মেট্রো পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, 'জল সরানোর কাজ চলছে। মেট্রো রেলওয়ের কর্মকর্তা ও কর্মীরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যা সমাধানের জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। স্বাভাবিক পরিষেবাগুলি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুনরায় চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।' তবে কয়েকঘণ্টা পর থেকেই স্বাভাবিক হয়ে যায় মেট্রো পরিষেবা। বুধবার সকাল থেকেই একেবারে সঠিক সময়ে চলছে মেট্রো এবং রেল। ফলে এদিন আর নিত্যযাত্রীদের অফিস যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না।
তবে কিছু জায়গায় এখনও জল জমে রয়েছে। তালিকায় ঠনঠনিয়া থেকে বালিগঞ্জ, গড়িয়া, নিউ গড়িয়ার বিক্ষিপ্ত অংশ।
কিন্তু ২৪ ঘণ্টায় কোন পথে কলকাতাকে জলের-পাশ থেকে মুক্ত করল কলকাতা পুরসভা?
মেয়র পারিষদ, নিকাশি, তারক সিংহ আজকাল ডট ইন-কে জানান-'এই কাজ একদিনের নয়। এই কাজ, প্রস্তুতি দীর্ঘদিনের। আমার ১০ বছর হয়ে গেল এই কাজে। এই সময়কালে আমি জানি, কিছু না হলেও সাত থেকে আট হাজার কোটি টাকা এই দপ্তরকে দেওয়া হয়েছে। যখন যা দরকার হয়েছে তাই সাহায্য পেয়েছি। ড্রেনেজ লাইন, পাম্পিং স্টেশন তৈরি, পুরনো পাম্পের বদল, নানা যন্ত্রাংশের ব্যবহার, লোকসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে, বেড়েছে গাড়ির সংখ্যা। এই দীর্ঘ প্রস্তুতির জন্য, কঠিন কাজ এত সহজে আমরা করতে পেরেছি। এই গোটা ঘটনায় সুপার হিরো আমাদের মুখ্যমন্ত্রী, মেয়র।'