• নাবালিকাকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ, মালদহের বাসিন্দার ২০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ
    বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: পরিচয় গোপন করে ফোনে নাবালিকার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন। এরপর প্রাণে মারার ভয় দেখিয়ে মালদহ থেকে শিলিগুড়িতে নিয়ে এসে হোটেলে ১৪ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ। ঘটনায় অভিযুক্তের ২০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। বুধবার ওই সাজা শোনান জলপাইগুড়ির বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক রিণ্টু শূর। মামলা দায়ের হওয়ার আটমাসের মধ্যে এই মামলায় সাজা ঘোষণা হল।গত ১৩ জানুয়ারি এনজেপি থানায় এই মামলা দায়ের হয়। নারী পাচার নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কয়েকজন সদস্য শিলিগুড়িতে অভিযুক্তকে পাকড়াও করেন। তার সঙ্গেই ওই নাবালিকা ছিল। মামলার সরকারি আইনজীবী দেবাশিস দত্ত জানান, অভিযুক্ত যুবক নাবালিকার পরিচিত। মালদহের বাসিন্দা মেয়েটি তাকে কাকা বলে ডাকে। কিন্তু পরিচয় গোপন করে অভিযুক্ত যুবক ফোন মারফৎ মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। বেশ কিছুদিন ফোনে কথাবার্তা হওয়ার পর মালদহে একটি আমবাগানে মেয়েটিকে দেখা করতে বলে অভিযুক্ত। সেইমতো মেয়েটি ফোনে কথা বলা ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে আসে। কিন্তু এসে দেখে, ওই ব্যক্তি তার পরিচিত। তখন অভিযুক্ত যুবক কেন তার সঙ্গে এমন কাজ করল, তা জানতে চায় নাবালিকা। বিষয়টি সে সবাইকে জানিয়ে দেবে বলেও জানায়। কিন্তু মেয়েটিকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখায় অভিযুক্ত। এমনকি ক্রমাগত শাসিয়ে মেয়েটিকে তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে বাধ্য করে সে।সরকারি আইনজীবী বলেন, গত ১১ জানুয়ারি মালদহ থেকে মেয়েটিকে শিলিগুড়িতে নিয়ে আসে অভিযুক্ত যুবক। শিলিগুড়িতে হোটেল ভাড়া করে মেয়েটিকে নিয়ে ওঠে সে। হোটেলে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত। হোটেল থেকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে মেয়েটিকে নিয়ে যায় সে। কিন্তু নাবালিকা খুবই কান্নাকাটি করায় অভিযুক্ত যুবক ঠিক করে, তাকে মালদহে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। মালদহের বাস ধরার জন্য যখন সে মেয়েটিকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, তখনই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যদের নজরে পড়ে বিষয়টি। মেয়েটির চোখমুখ দেখে তাদের সন্দেহ হয়। তাঁরা ওই কিশোরীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সঙ্গে থাকা যুবক বাধা দেয়। এতেই তাঁদের সন্দেহ আরও তীব্র হয়।" এরপর ওই যুবককে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেন এনজিও’র সদস্যরা। পুলিশের কাছে গোটা ঘটনাটি জানায় নাবালিকা।আদালতে জমা পড়া যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ ও ৬ জন সাক্ষ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। এদিন তাকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দু’মাস জেলের নির্দেশ দেয় আদালত। সঙ্গে নির্যাতিতা কিশোরীকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়েছে ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটিকে।
  • Link to this news (বর্তমান)