লাগাতার অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে মাওবাদী সদস্যরা। আগের দিনেই ছত্তিসগড়ের নারায়ণপুর থানা এলাকায় গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই শীর্ষ মাওবাদী নেতার। তারা দু'জনেই ছিলেন মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। আর, এই ঘটনার পরেই ফের আত্মসমর্পণ করল মাওবাদী সদস্যরা।
বুধবার, ছত্তিসগড়ের দান্তেওয়াড়া জেলায় এক সঙ্গে আত্মসমর্পণ করল ৭১ জন মাওবাদী সদস্য। আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে ২১ জন মহিলা। বুধবার যারা আত্মসমর্পণ করে তাদের মধ্যে ২ জন নাবালিকা এবং এক জন নাবালকও আছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের মধ্যে ৩০ জনের মাথার মোট দাম ছিল ৬৪ লক্ষ টাকা।
মাওবাদী বিরোধী অভিযানে এই দিনের ঘটনাকে বড় সাফল্য বলে মনে করছেন ছত্তিসগড় রাজ্যের প্রশাসন এবং পুলিশের বস্তার ডিভিশনের আধিকারিকরা।
বুধবার, ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই বলেন, ‘মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চলছে। গত কয়েক মাসে তাদের অনেক শীর্ষ নেতা মারাও গিয়েছে। আমরা তাদের আত্মসমর্পণ করে সমাজের মুল স্রোতে ফিরে আসার আবেদনও জানিয়েছি। আমরা তাদের জমি ছাড়াও তিন বছরের জন্য প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে সাহায্য দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছি। ফলে অনেকেই এখন আত্মসমর্পণ করছেন।’
এর আগে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণপুরের অবুঝমাঢ় এলাকায় আত্মসমর্পণ করে ১২ জন মাওবাদী সদস্য।
পুলিশ জানিয়েছে, মাওবাদীদের পুনর্বাসনের জন্য ‘লোন ভারাতু’ (গোন্ড ভাষায় এর অর্থ ‘ নিজের বাড়ি ফিরে যাও’) এবং ‘পুনা মারগেম’ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তারা রাজ্য সরকারের ‘নিয়াদ নেল্লানার’ (তোমার ভাল গ্রাম) প্রকল্পে পুনর্বাসন এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। এই প্যাকেজ ঘোষণা করার পরে ধারাবাহিক ভাবে অস্ত্র ছেড়ে সমাজের মূল স্রোতে ফেরার প্রবণতা বাড়ছে মাওবাদীদের মধ্যে।
দান্তেওয়াড়ার পুলিশ সুপার গৌরব রাই জানিয়েছেন, বুধবার যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের মধ্যে আছেন মাওবাদী সংগঠনের সশস্ত্র শাখা পিএলজিএ-র নেতা বামন মডকাম এবং মানকি ওরফে সামিলা মান্ডভি। তাদের দু'জনের নামেই ৮ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। এছাড়াও কয়েক জনের মাথার দাম ছিল ৫ লক্ষ টাকা করে। আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে ১৬ এবং ১৭ বছর বয়সি দুই নাবালিকাও আছে বলে জানান তিনি।