পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে অগ্নিগর্ভ লাদাখ। নেপালের ধাঁচে জেন জ়ির বিক্ষোভ হিংসাত্মক রূপ নিয়েছে। নিরাপত্তাকর্মী ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। জখম প্রায় ৭০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লেহ-তে জারি হয়েছে কার্ফু। এই সব কিছুর জন্য সোনম ওয়াংচুককে দায়ী করল কেন্দ্রীয় সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, ওয়াংচুকের ‘উস্কানিমূলক মন্তব্যের’ জন্যই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়।
কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, ওয়াংচুকের অনশন এবং বক্তৃতা বিক্ষোভকারীদের উসকে দিয়েছিল। তার ফলেই সরকারি অফিসে হামলা, অগ্নিসংযোগ, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর এবং ৩০ জনের বেশি পুলিশ এবং সিআরপিএফ কর্মী আহত হয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘২৪ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ অনশন মঞ্চ ছেড়ে উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেন ওয়াংচুক। তাতেই বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে এবং সিইসি লেহ-র সরকারি অফিসে হামলা চালায়।’
লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতাভুক্ত করে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে লেহ-তে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীন বিজেপির পার্টি অফিসে ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পাল্টা লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়।
ওয়াংচুক বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান। তাঁর মতে, ‘এটা দীর্ঘ দিন ধরে জমতে থাকা ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ’। তবে তিনি কোনও হিংসাত্মক আন্দোলনকে সমর্থন করেন না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই লেহ-তে কার্ফু জারি করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের স্পষ্ট অভিযোগ, ‘হিংসার মধ্যেই তিনি অনশন ভেঙে অ্যাম্বুল্যান্সে চড়ে গ্রামে ফিরে যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কোনও চেষ্টা করেননি।’
উল্লেখ্য, লাদাখের পৃথক রাজ্যের স্বীকৃতির দাবিতে বহুদিন ধরেই আন্দোলন চালাচ্ছিল লেহ অ্যাপেক্স বডি (LAB)। গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে অনশনে বসেছিলেন এই সংগঠনের দুই সদস্য। মঙ্গলবার তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর পরেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সংগঠনের সদস্যরা। কেন্দ্র এবং প্রশাসন তাদের দাবি পূরণে ব্যর্থ বলে অভিযোগ তুলে বুধবার বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় LAB-এর যুব শাখা। এদিন সকাল থেকেই পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়ে অশান্তি। প্রসঙ্গত, আগামী ৬ অক্টোবর লাদাখের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের।