সন্দীপ স্বর্ণকার, নয়াদিল্লি: শুরু হয়ে গিয়েছে দেবীপক্ষ। রাজধানীজুড়ে পুজো আয়োজনের ব্যস্ততা তুঙ্গে। নিত্য শ্রীরামকৃষ্ণ সাধনার মধ্যেই পুজোর আয়োজনে ব্যস্ত পাহাড়গঞ্জে দিল্লির রামকৃষ্ণ মিশন। আগামী ২০২৭ সালে মিশনের শতবর্ষ। ফলে পুজোর আয়োজনের পাশাপাশি শতবর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতিও চলছে জোরকদমে। রবিবার ষষ্ঠীর দিন শ্রীরামকৃষ্ণ আরতির পরেই হবে বোধন। বেলুড় মঠের প্রতিমার আদলে দেবী দুর্গা পূজিতা হবেন বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে। এতদিন ছবিতে পুজো হলেও গত তিন বছর ধরে হচ্ছে প্রতিমা পুজো। উৎসর্গ হবে মা সারদার নামে। ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ যখন বেলুড় মঠে প্রথম প্রতিমা পুজো শুরু করেন, তখন থেকেই মা সারদার নামেই হয় উৎসর্গ। দিল্লি মিশনের সচিব স্বামী সর্বলোকানন্দর তত্ত্বাবধানে ভাস্কর রায়, রাজীব রায়ের মতো গৃহী-ভক্তরা ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের প্রস্ততিতে। সপ্তমী-নবমী, দুপুরে মিলবে ভোগপ্রসাদ। মেট্রো রেলের কাজ চলায় বর্তমানে এলাকাটি একটু অগোছালো। তারই মধ্যে ভক্ত, দর্শনার্থীদের ভিড় জমবে মিশনের পুজোয়।
করোলবাগের ঝাণ্ডেওয়ালা মাতা মন্দিরেও নবরাত্রিতে নামে ভক্তের ঢল। ১৮ শতকে কাপড় ব্যবসায়ী বদ্রী দাস আরাবল্লী পর্বতের ঝর্নায় ডুবে থাকা মূর্তির খুঁজে পান। সেই মূর্তি দেখতেই ভিড় জমে ঝাণ্ডেওয়ালা মন্দিরে। শৈলপুত্রী, কাত্যায়নী, সিদ্ধিদাত্রী, মহাগৌরী... দশদিন দশ নামে পূজিতা হন দেবী। বাঙালির দুর্গাপুজো আর অবাঙালির নবরাত্রি, মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। একইভাবে পাহাড়গঞ্জ এলাকার সরকারি কলোনি আরামবাগ পুজো সমিতিতে রয়েছে চমকপ্রদ থিম—বাংলার যাত্রাপালা। আয়োজকদের পক্ষে অভিজিৎ বসু জানান, তথ্যপ্রযুক্তির যুগে হারিয়ে যাচ্ছে যাত্রাপালা। অথচ বিনোদনের পাশাপাশি মানুষকে সমাজ সম্পর্কে সচেতন করেছে যাত্রাপালা। হারাতে বসা সেই ঐহিত্যকেই মনে করিয়ে দিতে এবারের আয়োজন। মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে যাত্রায় ব্যবহৃত সামগ্রী দিয়ে।
রাজবাড়ির ঠাকুর দালানের আদলে সেজে উঠছে প্যাটেলনগরের পুজোর মণ্ডপ। বিশেষ আকর্ষণ ভোগপ্রসাদ। পূজা সমিতির সভাপতি দেবাশিস ভৌমিক বলেন, হীরক জয়ন্তী বর্ষের আয়োজনে পুজোর তিনদিন পাতে পড়বে বাসন্তী পোলাও, বেগুন-পটলভাজা, সবজি, আম-খেজুর-টম্যাটোর চাটনি। থাকবে মিষ্টি দইও। করোলবাগ বাঙালি মহল্লায় সোনার কারিগরদের পুজো আয়োজনও তাক লাগানোর মতো। করোলবাগ পুজো সমিতির সাধারণ সম্পাদক দীপক ভৌমিক জানান, সকল দর্শনার্থী ভোগপ্রসাদ পাবেন।