নীতীশের ‘ট্রাম্প কার্ড’ অতি অনগ্রসর শ্রেণিই বাজি কংয়ের
বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পাটনা: নোনিয়া, তেলি, মল্ল, ধানুক, অমত্য। মিথিলাঞ্চলের স্থানীয় ভাষায় পাঁচফোড়না বা পাঁচপানিয়া। অতি অনগ্রসর শ্রেণির (ইবিএস) অন্তর্ভুক্ত এই পাঁচ জনগোষ্ঠীই বিহার ভোটে সাফল্যের চাবিকাঠি হতে চলেছে। একদা নীতীশ কুমারের ‘ট্রাম্প কার্ড’ এই পাঁচফোড়নাকেই এবার বাজি ধরছেন রাহুল গান্ধী।
বিহারের জনসংখ্যার প্রায় ৩৬ শতাংশ। গত দু’দশকের প্রচেষ্টায় অতি অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত জনগোষ্ঠীর কাছে ‘আমি তোমাদেরই লোক’ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নীতীশ। তারই ‘সুফল’ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি থেকেছে তাঁর বশে। ‘অতি পিছড়া প্রকল্প’, স্কুলছাত্রীদের জন্য সাইকেল, পঞ্চায়েতে এক-তৃতীয়াংশ কোটা— জেডিইউ প্রধানের একের পর এক উদ্যোগকে শুধুমাত্র ‘জনকল্যাণে’র নিরিখে বিচার করলে সঠিক বিশ্লেষণ হবে না। সবটাই ছিল অতি সন্তর্পণে ‘পাঁচফোড়না’র মন জয়ের প্রচেষ্টা। তাতে সফলও হয়েছেন জেডিইউ প্রধান। আর সেই সমীকরণের হাত ধরেই গত দু’দশক বিহারের ক্ষমতার সর্বোচ্চ অলিন্দে বিচরণ করেছেন নীতীশ কুমার। পরিসংখ্যানেও সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। লোকনীতি-সিএসডিসি-র তথ্য বলছে, ২০১০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অতি অনগ্রসর শ্রেণির ৪৫-৫০ শতাংশ ভোটই জেডিইউ-বিজেপি জোটের পক্ষে গিয়েছিল। সেবার বিশাল জয় পেয়েছিলেন নীতীশ। ২০১৫ সালে লালুপ্রসাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহাজোট গড়ের নীতীশ। অতি অনগ্রসর শ্রেণির প্রায় ৫৫ শতাংশ ভোট ঝুলিতে এনে বিহার দখল করে মহাজোট। কিন্তু ২০২০ সালে এই শ্রেণি মূলত এনডিএ-র পক্ষে ভোট দেয়। সম্প্রতি রাহুল গান্ধী বিহারের এই অতি অনগ্রসর শ্রেণিকেই কাছে টানার লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছেন। জাতিগত সমীক্ষার পক্ষে তাঁর জোরালো সওয়াল ‘৩৬ শতাংশ’কে পাশে পাওয়ারই সচেতন প্রচেষ্টা। এমনকী পাটনার সদাকত আশ্রমে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেও এই বিষয়টিতে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে খবর। কংগ্রেস তার মহাজোট সঙ্গীদের নিয়ে অতি অনগ্রসর শ্রেণির কল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণার পথে হাঁটতে পারে বলে জানা গিয়েছে। ফলে নীতীশের ‘পাঁচফোড়না’কে কাছে টেনেই এবার বাজিমাতের চেষ্টায় রাহুল গান্ধী।