• আবাসনে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি তুঙ্গে ক’দিন রকমারি মেনু, কচিকাঁচাদের নিয়ে অনুষ্ঠান
    বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সুব্রত ধর, শিলিগুড়ি: থিম নেই। নেই আকাশচুম্বি মণ্ডপ। কিন্তু শারদোৎসব ঘিরে মিলন মেলার পরিবেশ তৈরি হয় শিলিগুড়ির আবাসনের পুজোগুলিতে। অংকন থেকে আবৃতি, নৃত্য থেকে গানের লড়াই। পুজোর চারদিন আবাসনের মণ্ডপে শিশুদের নিয়ে চলে এমন প্রতিযোগিতা। মহিলাদের জন্য থাকে মোমবাতি জ্বালানো থেকে শঙ্খধনী, হাঁড়ি ফাটানো থেকে ধুনুচি নৃত্য প্রতিযোগিতা। একই সঙ্গে থাকে পংক্তি ভোজ। তাতে খিচুড়ি থেকে লাবরা, ফ্রায়েডরাইস, পোলাও থেকে সবজি, মাছ, মাংস, চাটনি, মিষ্টি। পুজোর উদ্যোক্তারা বলেন, থিমের মণ্ডপ না হলেও আবাসনের পুজোয় ভক্তি, আনন্দ ও মিলন উৎসবের স্বাদ রয়েছে। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান সব ধর্মের পরিবারই পুজোয় শামিল হয়। 

    ইতিমধ্যে শহরের পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ সবদিক থিমের মণ্ডপে সেজে উঠেছে। আলো ঝলমল করছে মণ্ডপ চত্বর। এরমাঝেই সাদামাটা মণ্ডপ গড়ে পুজো হচ্ছে আবাসনগুলিতে। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য এসএফ রোডের মিলনপল্লি সরকারি আবাসন। পুজোর জন্য আবাসনের সাংস্কৃতিক মঞ্চ সাজিয়ে তোলা হয়েছে। নিয়ে আসা হবে ডাকেরসাজের প্রতিমা। ঝাড়বাতি ও স্পট লাইটের আলোয় মণ্ডপ ঝলমলিয়ে উঠবে। এই পুজো পরিচালনা করছে শিলিগুড়ি আবাসিক ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন। ষষ্ঠীতে পুজোর উদ্বোধন। ওইদিন থেকেই মণ্ডপ চত্বরে বসবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর। 

    পুজো কমিটির সম্পাদক সুবোধ হালদার বলেন, আবাসনে ১১০টি পরিবার থাকে।  এবার পুজোর ৪৮তম বর্ষ। চোখ ধাঁধানো মণ্ডপ না হলেও এখানে অনাবিল আনন্দের ব্যবস্থা রয়েছে। শিশুদের জন্য অংকন, আবৃতি, নৃত্য ও গানের লড়াই প্রতিযোগিতা চারদিন ধরে চলবে। অষ্টমী ও নবমীতে আবাসনের মহিলাদের জন্য মোমবাতি জ্বালানো ও শঙ্খধনী প্রতিযোগিতা রয়েছে। সেইসঙ্গে চারদিন এখানে মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা থাকছে। সপ্তমীতে ভাত, ডাল, সবজি, ভাজা, অষ্টমীতে খিচুড়ি, সবজি, ভাজা, চাটনি, নবমীতে পোলাও, পনিরের তরকারি, চাটনি এবং দশমীতে ভাত, মাংস, চাটনি, মিষ্টি মেনু তালিকায় রয়েছে। 

    শহরের বাবুপাড়া সরকারি আবাসনেও পুজো হয়। এবার এই পুজোর ১৯তম বর্ষ। বাঁশ, কাঠ, কাপড় দিয়ে মণ্ডপ বানানো হচ্ছে। ষষ্ঠীতে পুজোর উদ্বোধন করবেন মেয়র গৌতম দেব। এই পুজো পরিচালনা করছে বাবুপাড়া সরকারি রেন্টাল আবাসিক কালচারাল সমিতি। পুজো কমিটির সহ সম্পাদক গণেশচন্দ্র রায় বলেন, পুজোর চারদিন এখানে শিশুদের নিয়ে অংকন, আবৃতি, নাচ ও সংগীত প্রতিযোগিতা হবে। আর মহিলাদের জন্য ধুনুচি নৃত্য, মোমবাতি জ্বালানো, হাঁড়ি ফাটানো ও শঙ্খধ্বনী প্রতিযোগিতা। চারদিনই পুজোর ভোগ বিলি করা হবে। নবমীর মেনু হবে ফ্রায়েডরাইস, সবজি, ভাজা, চাটনি ও মিষ্টি। 

    এই দুই পুজোতেই রয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন। পুজো উদ্যোক্তারা বলেন, শুধু হিন্দুরা নন, আবাসনে বসবাসকারী মুসলিম, বৌদ্ধ,  খ্রিস্টান সহ সব ধর্মের মানুষ অংশ নেয়। আবাসনের মহিলাদের ভূমিকা তো প্রশংসনীয়। চারদিনই রাত জেগে তাঁরা পুজোর আয়োজন করেন। ভোগ রান্নার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও অংশ নেন। এমনকী, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শহরের মণ্ডপ হপিংও করেন। 

     শিলিগুড়ি আবাসিক ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের মণ্ডপ। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)