সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: ব্যাংক ডাকাতির ছক বানচাল। গ্রেফতার বিহারের দুই দুষ্কৃতী। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে জাল আধার কার্ড, জাল নম্বরপ্লেট যুক্ত চুরির বাইক সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। হরিশ্চন্দ্রপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের এই ঘটনায় ধৃতদের চাঁচল মহকুমা আদালতে তুলে সাতদিনের হেপাজতে নিয়েছে পুলিশ। ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা হল বীরুকুমার যাদব ও সতীশ যাদব। তাদের বাড়ি বিহারের কাটিহার জেলায়। হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ওই দুই দুষ্কৃতী জড়ো হয়েছিল ডাকাতির উদ্দেশ্যে। গ্ৰাহক সেজে লাইনে দাঁড়িয়ে রেইকি করছিল তারা। তারা কখনও ব্যাংকের ভিতরে ঢুকে লোনের বিষয়ে খোঁজখবর করে। কখনও আবার কেওয়াইসির অছিলায় ব্যাংকের ভিতরের পরিবেশ দেখে। তারা হিন্দিতে কথা বলায় সন্দেহ হয় ব্যাংকে আসা গ্রাহকদের। দু’জনের কাঁধে ব্যাগ থাকায় সন্দেহ আরও বাড়ে। গ্রাহকরা কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ার ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান। ওই দুইজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাদের কথায় অসংগতি ধরা পড়ে। ব্যাংক থেকে ফোন যায় থানায়।
পুজোর আগে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ তখন ব্যাংকের একটু দূরে রুটিনমাফিক টহল দিচ্ছিল। খবর পেয়ে ব্যাংকে আসে পুলিশ। দু’জনকে আটক করে। তারপর ব্যাংকের বাইরে রাস্তার ধারে একটি বাইক উদ্ধার হয়। যার নম্বর প্লেট ভুয়ো ছিল। বাইক মালিকের খোঁজ করতেই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। গাড়িটি চোরাই বাইক ছিল। ওই বাইকে করেই তারা ডাকাতির উদ্দেশে ব্যাংকে আসে। তাদের তল্লাশি করতেই উদ্ধার হয় জাল আধার কার্ড, মাস্ক, স্ক্রু ড্রাইভার, ব্যাংকের কিছু কাগজপত্র ও নোট বুক। এরপরই পুলিশ তাদের নিয়ে যায় থানায়।
জেরায় তারা ডাকাতির ছকের কথা স্বীকার করেছে বলে জানায় পুলিশ। ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার দীপক জে সিং বলেন, তারা গ্ৰাহক সেজে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের কথাবার্তা ও চলাফেরা দেখে সন্দেহ হয়। লোন ও কেওয়াইসি করতে এসেছে বলে জানায়। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকে জানাই। এরপর তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার বলেন, ধৃতরা বহু রাজ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত। ভুয়ো পরিচয় ব্যবহার করে তারা আত্মগোপন করে থাকে। আধার কার্ডে তাদের ঠিকানা ঝাড়খণ্ডের। কিন্তু বাড়ি বিহারে। ভুয়ো আধার বানিয়ে অপরাধমূলক কাজ করে গা ঢাকা দিয়ে থাকছে। ধৃতদের হেপাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে আর কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে। • নিজস্ব চিত্র।