• গ্যাং ওয়ারেই কি বাঁকুড়ায় যুবক খুন? অভিযুক্তরা অধরা, ক্ষোভ
    বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার গোবিন্দনগর বাসস্ট্যান্ডে ‘গ্যাং ওয়ারেই’ কি যুবক খুন হয়েছে? এই প্রশ্ন পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। কারণ মৃত যুবক বছর ছাব্বিশের লক্ষ্মীকান্ত গড়াই পুলিশের খাতায় দাগি অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত ছিল। গোবিন্দনগর এলাকায় সে নেশার সামগ্রী বিক্রি করত বলে অভিযোগ। ফলে ওই কারবারে সঙ্গে জড়িত অন্য গোষ্ঠীর লোকজন তাকে গুলি করে খুন করল কি না, তা তদন্তকারীরা জানার চেষ্টা করছেন। তবে ঘটনার পর দু’দিন কেটে গেলেও পুলিশ ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রও পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। ফলে পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। 

    বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, মুখোমুখি দুই দুষ্কৃতী দলের গুলির লড়াই হয়নি বলেই প্রাথমিক অনুমান। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোল সেভাবে পাওয়া যায়নি। লক্ষ্মীকান্তকে একা পেয়ে বিপক্ষ শিবিরের কেউ বা কারা গুলি করতে পারে। আমরা কয়েকজন সন্দেহভাজনকে আটক করে জেরা চালাচ্ছি। জোরালো প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের মধ্যে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে ধারাবাহিক অভিযান চালানো হচ্ছে।

    উল্লেখ্য, সোমবার গভীর রাতে গোবিন্দনগর বাসস্ট্যান্ড চত্বর থেকে লক্ষ্মীকান্তের দেহ উদ্ধার হয়। তার মাথায় গুলির ক্ষত ছিল। সে দিনের বেলায় বাসস্ট্যান্ডে লটারি বিক্রি করত। লটারির দোকানকে ঢাল করে আড়ালে চলত বেআইনি কারবার। রাতের অন্ধকারে মদ, গাঁজা বিক্রি বাড়ত। বাসস্ট্যান্ড, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে থাকা একাধিক ‘ঠেকে’ ওইসব নেশার সামগ্রী পৌঁছে যেত। নেশার সামগ্রী বিক্রির অভিযোগে সে এর আগে পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছিল। লক্ষ্মীকান্তের উপর পুলিশের নজর থাকায় সে কিছুটা দমে যায়। সেই সুযোগে অন্য গোষ্ঠীর লোকজন মাথাচাড়া দেয়। তারাও নেশার সামগ্রী বিক্রি করে। অন্য গোষ্ঠীও নেশার সামগ্রীর বাজারের দখল নিতে বেপরোয়া ওঠে। তা থেকেই দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। সেই কারণে খুন বলে পুলিশের একাংশ মনে করছে। সদর থানার এক আধিকারিক বলেন, বড় বড় শহর বা শিল্পাঞ্চলে বেআইনি সাম্রাজ্যের দখলে রাখতে যেভাবে ‘গ্যাং ওয়ার’ হয়, তা বাঁকুড়াতে হওয়া সম্ভব নয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে বাঁকুড়া শহর বা লাগোয়া এলাকায় গুলি চলেনি। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাও সেভাবে ঘটেনি। ফলে শহরের বুকে গুলি চালিয়ে এক দুষ্কৃতীকে কে খুন করল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এর পিছনে মহিলাঘটিত কোনও কারণ রয়েছে কি না, তাও আমরা খতিয়ে দেখছি। খুনি যে ‘শার্প শ্যুটার’ সেব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। তবে দেশি নাকি স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালানো হয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। খুনি গ্রেফতার হওয়ার আগে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব নয় বলেই মনে 

    হচ্ছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)