• সীমান্তের পুজোগুলিতে যোগ দেন বিএসএফ জওয়ানরাও, শিকারপুর কুঠিপাড়ার পুজো ঘিরে উচ্ছ্বাস
    বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, করিমপুর: বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বিএসএফের জওয়ানরাও গ্রামের মানুষদের সঙ্গে মেতে ওঠেন দুর্গাপুজোর আনন্দে। সীমান্তে কর্মরত বহু বাঙালি বিএসএফ জওয়ান পুজোয় ছুটি পান না। তাঁরা শিকারপুর কুঠিপাড়ার পুজোয় অংশ নেন। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে মাত্র একশো মিটার দূরত্বে এই পুজো মণ্ডপ। প্রায় চল্লিশ বছর আগে এই পুজো দেখতে ভিড় করতেন বাংলাদেশের বহু মানুষ। কিন্তু এখন সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ায় ওপার থেকে মানুষের আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অন্য বছরের মত এবারেও জোরকদমে চলছে কুঠিপাড়া সর্বজনীন পুজোর প্রস্তুতি। এই দুর্গাপুজো কমিটির সম্পাদক অপূর্ব ঘোষ বলেন, এই পুজো গ্রামের পুরনো পুজো বলে এলাকার সকলেই মণ্ডপে আসেন।  পুজোর অঞ্জলি দেওয়া কিংবা প্রসাদ বিতরণ সবেতেই জওয়ানরা অংশগ্রহণ করেন। বাঙালি ছাড়াও এখানে পুজোর সময়ে অবাঙালি  জওয়ানরাও শারদোৎসবের আনন্দে মেতে ওঠেন। আগের বছর  বিএসএফের ৮৬ নং ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা ছিলেন। এবছর ১১ নম্বর ব্যাটালিয়ন রয়েছে। জওয়ানদের একজন জানান, এই সময়ে নিজের বাড়িতে থাকলে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো যেত। কিন্তু ছুটি না পাওয়ায় এবার এখানকার মানুষের সঙ্গে দুর্গাপুজোয় আনন্দ করব। এই গ্রামের মানুষরা পুজোয় থাকার জন্য আমাদের সব কর্মীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। গ্রামের গোলক বিশ্বাস জানান, পুজোর চারদিন পাড়ার সকলে একসঙ্গে বিএসএফ জওয়ানদের হৈ হুল্লোড় করেন। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা পুজোয় চাঁদা দেওয়া থেকে শুরু করে পুজোর সমস্ত আনন্দে অংশ নেন।  প্রায় সত্তর বছর আগে এখানে করিমপুর ১ ব্লক অফিসের সরকারি কর্মীদের আবাসন ছিল। তৎকালীন বিডিও অফিসের কোষাধ্যক্ষ গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণপদ জোয়ারদারের সহযোগিতায় এই পুজো শুরু করেন। বছর দুয়েক পরে ওই সরকারি কর্মীরা অন্যত্র বদলি হয়ে গেলে পুজোর দায়িত্ব নেন গ্রামেরই ফণীভূষণ মণ্ডল, রমানাথ ঘোষ এবং অনিল শীল। সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার আগে পড়শি বাংলাদেশের ধর্মদা, বিলগাঁথিয়া, কাঁদিপুর গ্রাম থেকে কয়েকশো মানুষ এই পুজো দেখতে আসতেন। ওদেশের হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ তখন সকালে এসে দিনের শেষে বাড়ি ফিরতেন। বর্তমানে দেশের নিরাপত্তার কারণে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পরে তাঁরা আর আসতে পারেন না। স্থানীয়রা জানান, গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ চাষবাসের উপর নির্ভরশীল। আগে শুধু চাঁদা সংগ্রহ করেই পুজো হতো, তবে বিগত কয়েক বছর রাজ্য সরকার অনুদান দেওয়ার ফলে পুজোর আয়োজন করতে সুবিধা হয়েছে। এছাড়াও বিএসএফ জওয়ানরাও চাঁদা দেন আমাদের পুজোয়।
  • Link to this news (বর্তমান)