• স্কুলের জমি বিক্রি প্রধান শিক্ষকের, নন্দীগ্রামে শোরগোল, এসআই অফিসে বিক্ষোভ
    বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: নন্দীগ্রাম বিএমটি হাইস্কুলের জমি বিক্রির ঘটনায় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার বাসিন্দারা। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তাজপুরে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গড়ার নামে নন্দীগ্রাম বিএমটি হাইস্কুলের ২০বিঘা জমি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। অথচ, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গড়ে ওঠেনি। জমি বিক্রির জন্য রাজ্যের শিক্ষাদপ্তর থেকে এনওসি আদায় করে নেওয়া হলেও শর্ত অনুযায়ী ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরির জন্য একটিও ইট গাঁথা হয়নি। বিপুল পরিমাণ জমি বিক্রি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। এনিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের লক্ষ্যে নন্দীগ্রাম বিএমটি হাইস্কুল জমি রক্ষা কমিটিও গড়া হয়েছে। ইতিমধ্যে জমি হাতবদলের বেশকিছু দলিল জোগাড় করেছে ওই কমিটি। এখনও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরির কোনও অনুমোদন হয়নি বলে ব্লক প্রশাসনের কাছ থেকে আরটিআই রিপোর্ট সংগ্রহ করার পর এদিন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসে বিক্ষোভ চলে।

    নন্দীগ্রাম বিএমটি হাইস্কুলের নামে দক্ষিণ ২৪পরগনা জেলার পাথরপ্রতিমা ছাড়াও নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের বাহাদুরপুর, মহেশপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর সম্পত্তি দান করা হয়েছিল। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সেইসব সম্পত্তি বিক্রি করে সেই টাকায় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ক্যাম্পাস খোলার উদ্যোগ নেন প্রধান শিক্ষক। স্কুলের নামে থাকা ২০বিঘা জমি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। অথচ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরির পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এজন্য তাজপুর মৌজায় ৫৫শতক জমি কেনা হলেও তা বাজারদরের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দাম মেটানো হয়েছে বলে কমিটির নেতা সঞ্জয় পাত্রের অভিযোগ। জমি বিক্রির পর কেন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরি হল না তানিয়েই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ অভিভাবক থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। 

    ১৯১২সালে তৈরি হয়েছিল নন্দীগ্রাম বিএমটি হাইস্কুল। যদিও তখন নাম ছিল কারমাইকেল স্কুল। পরবর্তীতে নাম বদল হয়। স্কুলের জমি নন্দীগ্রাম হাইস্কুল, নন্দীগ্রাম বিএমটি হাইস্কুল এবং নন্দীগ্রাম উচ্চ ইংরেজি মাধ্যম স্কুল নামে তিনটি আলাদা রেকর্ড হয়েছিল। 

    সম্প্রতি সেই তিনটি স্কুল এক বলে রেকর্ড বদল করে হাতবদল হয়েছে। তাতেই চটেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, রেকর্ড বদল করে জমি হাতবদল কেন হবে? তাছাড়া, ২০বিঘা জমি বিক্রি করে তা দিয়ে মাত্র ৫৫ডেসিমল জমি কিনে সবটাকা খরচ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এটা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। বরং বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ।

    স্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত শাসমল বলেন, আমরা নন্দীগ্রামের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জমি বিক্রি করে সেই অর্থ দিয়ে একটা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরির সিদ্ধান্ত নিই। শিক্ষাদপ্তর থেকে জমি বিক্রির অনুমতি জোগাড় করা হয়। সেই জমি বিক্রি করে তাজপুরে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরির জন্য ৫৫ডেসিমল জমি কেনা হয়েছে। কিন্তু, বাধা-বিপত্তির কারণে সেই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গড়া যাচ্ছে না। কিছু লোক বাগড়া দিয়ে যাচ্ছেন। আমার নামে ষড়যন্ত্র করছেন।

    বিক্ষোভকারী অশোক করণ বলেন, রেকর্ড বদল করে অবৈধভাবে জমি বিক্রি করা হয়েছে। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরির কথা বলা হলেও আদৌ সেসব কিছু হয়নি। জমিরক্ষা কমিটি গড়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে। নন্দীগ্রাম পূর্ব সার্কেলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক তথা ওই স্কুলের প্রশাসক মলয় মণ্ডল বলেন, শিক্ষাদপ্তরের একটা অর্ডার থাকার কারণে জমি বিক্রি করা হয়েছে। এদিন যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা বেশকিছু বিষয় সামনে এনেছেন। আমরা সেসব খতিয়ে দেখছি।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)