সাবধান! পুজোর ভিড়ে অপকর্ম করলে ধরিয়ে দেবে পুলিশি ড্রোন
বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: পুজোর ভিড়ে অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবিলায় ড্রোন ক্যামেরা ওড়াবে পুলিশ। থাকবে সিসি ক্যামেরা এবং ভিডিওগ্রাফিও। জেলা পুলিশের কন্ট্রোলরুম থেকেই নজরদারি চালানো হবে। মেচেদা এবং কাঁথি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে পুলিশ কিয়স্ক থাকছে। সেখান থেকেও সিসি ক্যামেরায় নজরদারি চলবে। এছাড়া, জেলায় ৩০টি পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ বানানো হচ্ছে। ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসারদের নেতৃত্বে পুরো জেলাকে কয়েকটি জোনে ভাগ করে পুজোর সময় পুলিশি অ্যারেঞ্জমেন্ট করা হচ্ছে। পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, পুজোর সময় মূলত দু’ধরনের অপরাধ হয়। একটি ভিড়ের মধ্যে ছিনতাই কিংবা চুরি। দ্বিতীয়টি হল, বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে চুরি। প্রথমটির জন্য আমরা সাদা পোশাকের পুলিশ, সিসি ক্যামেরা ও ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহারে জোর দিচ্ছি। দ্বিতীয়টির জন্য গৃহস্থকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। সপরিবারে বেড়াতে যাওয়ার বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানানোর প্রয়োজন নেই। পুজোর সময় বাড়ি খালি থাকার বিষয়টি দরকারে থানায় জানাতে পারেন। পুলিশের বাইক বিভিন্ন এলাকায় টহল দেবে।
জানা গিয়েছে, এবার পূর্ব মেদিনীপুরে পুজোর সময় প্রায় পাঁচশো পুলিশ অফিসার ডিউটিতে থাকছেন। এছাড়াও ১২৫০জন কনস্টেবল ও লেডি কনস্টেবল থাকবেন। চার হাজার সিভিক ভলান্টিয়ারও থাকবে। ২৫সেপ্টেম্বর থেকেই কলকাতামুখী ভারী যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা শুরু হবে। পাঁশকুড়া, তমলুক, কোলাঘাট প্রভৃতি জায়গায় জাতীয় সড়কের ধারে গাড়িগুলি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পুজোর সময় প্রত্যেকবার মহিষাদলে গাইড ম্যাপ উদ্বোধন করা হয়। এবার কাঁথি শহরেও এরকম গাইডম্যাপ উদ্বোধন করতে চাইছে পুলিশ। পুজোর সময় কাঁথি শহরে যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তমলুক, হলদিয়া ও পাঁশকুড়ায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হবে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রত্যেক পুজো কমিটিতে মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরবাইরে ভিড়ে নজরদারি রাখার জন্য আলাদাভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে ড্রোন ক্যামেরা থাকবে। ভিডিও ক্যামেরাও থাকছে। কন্ট্রোল রুম থেকে তার নজরদারি থাকবে। জেলায় ৩০টি পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ থেকে শিশুদের পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। এনিয়ে মাইকিংও করা হবে। ওইসব বুথ থেকে কার্ড সংগ্রহ করে কচিকাঁচাদের গলায় ঝুলিয়ে রাখলে ভিড়ের মধ্যে হাতছাড়া হলেও খুঁজে পেতে সুবিধা হবে। আগামী ২, ৩ ও ৪অক্টোবর বিসর্জন হবে। এনিয়ে পুলিশ ও প্রশাসন পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে যাতে বিসর্জন প্রক্রিয়া হয় তানিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৪অক্টোবর তমলুক শহরে কার্নিভাল হবে। সেখানে যথাযথ পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
পুজোর সময় দীঘা, মন্দারমণিতেও ভিড় বাড়ে। সেকথা মাথায় রেখে একজন ডিএসপির নেতৃত্বে পর্যটনস্থলে বাড়তি নজরদারি থাকবে। জলপথেও নজরদারি বাড়ানো হবে। এর বাইরে নিরাপত্তা নিয়ে হাইওয়ের ধারে থাকা পুজো কমিটির সঙ্গে পুলিশের কথা হয়েছে। সম্প্রতি পাঁশকুড়ার মেচগ্রামে বিশ্বকর্মা পুজোর মেলা চলাকালীন ট্রাভেলার গাড়ি ঢুকে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। দু’জন মারা যান। জখম হন আরও ন’জন। এধরনের ঘটনা মোকাবিলায় রাস্তার ধারে পুজোয় পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে। পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য।-নিজস্ব চিত্র