নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: উমা মায়ের আগমনে ইতিমধ্যেই উৎসবের আবহে রঙিন নদীয়া। প্রতিটি পাড়ায় পুজো মণ্ডপে আলোর ঝলকানিতে সাজ সাজ রব। পুজো মানেই নতুন জামা, আড্ডা, ঠাকুর দেখা, আর সঙ্গে রাস্তায় বা রেস্তোরাঁয় ভরপুর পেটপুজো। চপ, কাটলেট, চাউমিন, মোগলাই, ফুচকা, কাবাব সবই যেন উৎসবের অংশ। কিন্তু আনন্দঘন এই আমেজের আড়ালেই লুকিয়ে থাকে এক বড় উদ্বেগ, ভেজাল খাবারের রমরমা।
প্রশাসনের অভিজ্ঞতা বলছে, পুজোর মরশুমে খাবারের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তার সুযোগ নিয়েই অনেক হোটেল ও অস্থায়ী রেস্তোরাঁ রান্নায় একই তেল বারবার ব্যবহার করে চপ, কাটলেট, রোল ভাজে। রাস্তার ধারে খোলা জায়গায় তৈরি হয় চাউমিন, এগরোল, মোগলাই। ধুলোবালি মিশে খাবারের মান যেমন নষ্ট হয়, তার স্বাদ ও গন্ধ বাড়াতে মেশানো হয় নিয়ম বহির্ভূত সব কেমিকেল। তবুও ভিড়ের চাপে, উৎসবের উচ্ছ্বাসে সেই খাবারই দেদার বিক্রি হয়। ফলে উৎসবের আনন্দেই বাড়তে থাকে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি।
এই বাস্তবতাকে মাথায় রেখেই এ বছর নদীয়া জেলা প্রশাসন ও খাদ্য সুরক্ষা দফতর নড়েচড়ে বসেছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, পুজোর সময় সাধারণ সময়ের তুলনায় অভিযান বাড়ানো হবে। জেলার হোটেল ও রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাবারের মান পরীক্ষা করা হবে। প্রয়োজনে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হবে পরীক্ষাগারে। শুধু বড় হোটেল নয়, পুজো মণ্ডপের সামনে ঠেলা বা স্টল নিয়ে যাঁরা খাবার বেচেন, তাঁদেরও নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। তাঁদের হাতে এমন কিছু সামগ্রী তুলে দেওয়া হবে, যেগুলি ব্যবহার না করলে পুজোর সময় খাবার বিক্রি করা যাবে না।
খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের আধিকারিক সচিন সুরওয়াডে জানান, উৎসবের সময় মানুষ যাতে নিরাপদ খাবার খেতে পারেন, সেটা দেখাই আমাদের লক্ষ্য। উৎসবের ভিড়ের আড়ালে কেউ যেন নিম্নমানের বা ভেজাল খাবার বিক্রি করতে না পারে, সেই দিকেই আমাদের নজর থাকবে।
ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দপ্তর ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। সম্প্রতি জেলার কয়েকটি হোটেল ও দোকানে ভেজাল খাদ্যসামগ্রী ধরা পড়ায় সতর্কতা আরও বেড়েছে। সেই কারণেই এবারের অভিযান আরও কড়া হবে। পাশাপাশি, যেসব ব্যবসায়ীর ফুড লাইসেন্স বা রেজিস্ট্রেশন নেই, তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতীকী চিত্র