বজবজের মণ্ডপে ফুটে উঠবে স্বদেশি আন্দোলন, মধুবনী শিল্পের মাধ্যমে রামায়ণ কথা
বর্তমান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বিমল বন্দ্যোপাধ্যায়, বজবজ: বজবজ ৪ নম্বর গেট পুজো কমিটির মণ্ডপে এবার বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি। বজবজের পাঁজালপাড়া ধর্মতলা রোডের ১১ পল্লি দুর্গাপুজো কমিটির ভাবনা স্বদেশ। দেশ স্বাধীন করার জন্য যাঁরা শহিদ হয়েছেন, তাঁদের বীরগাথা মণ্ডপজুড়ে। বজবজ ৬ নম্বর গেটের মনসাতলা পুজো কমিটির ভাবনায় বাল্মীকি মুনির রামায়ণ কথা। মধুবনী শিল্পের সূক্ষ্ম কারুকাজের মাধ্যমে তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপের ভিতরে ও বাইরে। প্রতিমায় অবশ্য থাকছে সাবেকি ছোঁয়া। সব মিলিয়ে বৈচিত্র্যের আরাধনায় মেতেছে এই বারোয়ারি পুজোগুলি।
বজবজ ঐতিহাসিক স্থান। এখানেই ইংরেজ শাসনের সময় কামাগাথামারুর ঘটনা ঘটেছে। পুরনো স্টেশন থেকে ৪০ ফুট সামনে ৮৬ বছরের ৪ নম্বর গেট সর্বজনীন পুজোর মণ্ডপ হয়েছে সেই কামাগাথামারুর স্মৃতিস্তম্ভই। রাস্তার উপর পুজোর বিশাল মণ্ডপ। প্রায় ১৭ ফুট মণ্ডপের উচ্চতা। তার উপর শান্ত সমাহিত বিশাল বুদ্ধমূর্তি। পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ কার্তিক সামন্ত বলেন, এই রাস্তা দিয়ে তেলের ট্যাঙ্কার যায়। তাই এত উঁচু গেট করা হয়েছে। যদিও পুজোর ক’দিন গাড়ি চলাচল ঘুরিয়ে দেওয়া হবে, যাতে মানুষ স্বস্তিতে প্রতিমা দেখতে পায়। চন্দননগরের আলো দিয়ে মণ্ডপ চত্বর সাজানো হচ্ছে।
১১ পল্লি পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ অমিত মিত্র বলেন, এই বজবজের মাটিতে বহু বিখ্যাত মানুষ পা দিয়েছে। বিশেষ করে ইংরেজ আমলে নেতাজি সুভাষ থেকে স্বামী বিবেকানন্দের মতো মানুষের পা পড়েছে এখানে। শুধু তাই নয়, স্বদেশি আন্দোলনের কেন্দ্রও ছিল এটি। তাই আমাদের এবারের ভাবনা স্বদেশ। এই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করছেন শ্বাশত ঘোষ। মণ্ডপের বাইরে ও ভিতরে স্বদেশি শহিদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়েছে ছবির মধ্যে দিয়ে। এছাড়াও কোমাগাতা মারু জাহাজের ইতিহাস, বিবেকানন্দের বিশ্ব ধর্ম সম্মেলন শেষে বজবজের মাটিতে রাত্রীবাস থেকে ভোরের ট্রেনে যাত্রা, প্রতিটি ঘটনা মণ্ডপের থিমে যুক্ত হয়েছে। ১১ পল্লির পুজোর বয়স ৬১। আলো দিয়েছেন চন্দননগরের এক শিল্পী।
৬ নম্বর গেট মনসাতলা পুজো কমিটি বিহারের মধুবনী শিল্পকে থিম করেছে। ‘থিম মেকার’ শ্বাশত ঘোষ বলেন, ১২২ বছরের এই পুজোয় রামায়ণের কাহিনী মধুবনী শিল্পের ভাষায় বলার চেষ্টা করেছি। তবে প্রতিমার কোনও পরিবর্তন হয়নি। সাবেকি ঘরানায় তৈরি হয়েছে এখানকার প্রতিমা। বজবজ ৪ নম্বর গেট পুজো কমিটির প্রতিমা।-নিজস্ব চিত্র