টানা বৃষ্টিতে রাস্তায় নামতে পারল না প্রায় ৫০টি সরকারি বাস
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মঙ্গলবার রাতভর টানা পাঁচ ঘণ্টার বৃষ্টিতে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল শহরের যানবাহন পরিষেবা। গভীর রাতে শুরু হওয়া ঝমঝমে বৃষ্টির ফলে বুধবার সকালে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগমের (ডব্লিউবিটিসি) অন্তত ৪৫ থেকে ৫০টি বাস বসে গেল। তার মধ্যে একাধিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসও রয়েছে, যেগুলি রাস্তায় নামতে পারেনি। রাজ্য সরকারের দাবি, ১৯৮০ সাল থেকে এ পর্যন্ত এটাই কলকাতায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি।
পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টিতে জলমগ্ন রাস্তায় বারবার যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে অচল হয়ে পড়ে সরকারি বাস। ঠিক দুর্গাপুজোর আগে যখন প্রতিদিন অন্তত ৭০০ থেকে ৭৫০টি বাস চালানো দরকার, তখন এতগুলি বাস বিকল হয়ে পড়ায় চাপ বেড়েছে পরিবহন দপ্তরের উপর। বিভাগের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘এই অবস্থায় যাত্রীদের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক সরকারি বাস রাস্তায় নামানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
শুধু তাই নয়, দপ্তরের হিসাবে, গত সাত-আট মাস ধরে নিগমের আরও প্রায় ২৫০টি বাস বিভিন্ন ডিপোয় অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এই তালিকায় প্রায় ৪০টি এসি এবং ২০টি ভলভো বাসও রয়েছে। টায়ার, গিয়ার, ক্লাচ-সহ নানান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই বাসগুলি অচল। এইসব বাসগুলি মেরামতির জন্য অন্তত ১৩ কোটি টাকার প্রয়োজন। সেই টাকার জন্য পরিবহন দপ্তরের তরফে ইতিমধ্যেই অর্থদপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও অর্থদপ্তর থেকে এখনও সেই টাকা ছাড়া হয়নি। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমানো যাচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, অর্থাভাবের কারণে আগেই পরিবহন দপ্তর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, বেসরকারি সংস্থাকে কিছু সরকারি বাস চালানোর দায়িত্ব দিয়ে আয়ের উৎস বাড়ানো হবে। কিন্তু সেই উদ্যোগ কার্যকর হয়নি। বেসরকারি সংস্থাগুলির দাবি, সরকারি বাসের জ্বালানি খরচ বেশি, অথচ গাড়ির মাইলেজ কম। ফলে এই প্রকল্প আর্থিকভাবে লাভজনক নয়।
বর্তমানে সাতটি রুটের মধ্যে মাত্র দুটি রুটে বেসরকারি সংস্থা সরকারি বাস চালাচ্ছে। এই দুটি রুট হল– সি-২৬ হাওড়া থেকে বারুইপুর এবং ডি-১ হাওড়া থেকে বারাসত। বাকি রুটে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের আগ্রহ দেখা যায়নি। ফলে দুর্গাপুজোর আগে এমন পরিস্থিতি যাত্রীদের ভোগান্তি যে আরও বাড়াবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।