• নির্বাচন কমিশন...
    আজকাল | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক:  ভোটার তালিকা থেকে নাম সংযোজন বা বিয়োজনের প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন অফ ইন্ডিয়া (ECI) নতুন নিয়ম চালু করেছে। এবার থেকে ফর্ম–৬ (নতুন ভোটার নাম নথিভুক্তির আবেদন) ও ফর্ম–৭ (ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া বা আপত্তি জানানোর আবেদন) জমা দেওয়ার সময় আধার-সংযুক্ত মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে ই-সাইন (e-sign) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

    গত ২৩ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের ECINet পোর্টাল এবং মোবাইল অ্যাপে নতুন ই-সাইন সুবিধা যুক্ত হয়। এর ফলে আবেদনকারীকে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং আধার-সংযুক্ত মোবাইল নম্বরে একই নাম ও তথ্য নিশ্চিত করতে হবে। আবেদন প্রক্রিয়ায় প্রথমে ফর্ম পূরণ করার পর ব্যবহারকারীকে নিয়ে যাওয়া হবে Centre for Development of Advanced Computing (CDAC)–এর ই-সাইন পোর্টালে। সেখানে আধার নম্বর দিয়ে ওটিপি (OTP) জেনারেট করতে হবে, যা যাবে সংশ্লিষ্ট আধার-সংযুক্ত মোবাইল নম্বরে। সেই ওটিপি দিয়ে আবেদন সম্পূর্ণ করা হবে।

    এই নতুন পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছে  এমন এক সময় যখন কংগ্রেস নেতা ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী সম্প্রতি অভিযোগ করেছিলেন যে, সফটওয়্যারের মাধ্যমে সংগঠিতভাবে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া  হচ্ছে।

    আরও পড়ুন: ‘‌ভোট চুরি, চাকরি চুরি আর বেশিদিন বরদাস্ত করবে না যুবসমাজ’‌, রাহুলের নিশানায় মোদি সরকার

    ১৮ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, কর্ণাটকের আলন্দ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ৬,০১৮ ভোটারকে ভুয়া আবেদনের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রের রাজুরাতেও একই ধরনের অনিয়ম হয়েছে। বাইরে থেকে সংগৃহীত মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে কেন্দ্রীয়ভাবে সফটওয়্যারের সাহায্যে বুথ ধরে ধরে  কংগ্রেস ভোটারদের টার্গেট করা হয়েছে। “প্রত্যেক বুথের ১ নম্বর সিরিয়ালে থাকা ভোটারের নামে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে ফেলার আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে,” অভিযোগ করেন তিনি। রাহুল গান্ধীর দাবি, এটি কোনো স্থানীয় কর্মী স্তরের কাজ নয়, বরং কল সেন্টার স্তরে বসে সংগঠিতভাবে করা হয়েছে।

    নির্বাচন কমিশন শুরুতে গান্ধীর অভিযোগকে “ভিত্তিহীন ও ভুল” বলে খারিজ করলেও, তাদের অবস্থান পরে প্রশ্ন তুলেছে। কমিশন জানায়, আলন্দে ব্যাপক ভোটার বিয়োজনের সন্দেহে এফআইআর দায়ের হয়েছে। রাজুরাতেও ভোটার নাম সংযোজন নিয়ে একইভাবে মামলা রুজু হয়েছে। অর্থাৎ, কমিশন একদিকে রাহুল গান্ধীর বক্তব্য অস্বীকার করেছে, আবার অন্যদিকে তদন্তের প্রয়োজন স্বীকার করেছে।

    নতুন ই-সাইন পদ্ধতি চালু হওয়ায় ভবিষ্যতে ভুয়ো  আবেদন বা বহিরাগত মোবাইল নম্বর দিয়ে ভোটার তালিকা বদলের সুযোগ অনেকটাই বন্ধ হবে বলে কমিশনের আশা। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, এভাবে আধার-সংযুক্ত মোবাইল নম্বর বাধ্যতামূলক করা হলে ভোটারদের গোপনীয়তা ও নাগরিক অধিকারের প্রশ্নও নতুন করে সামনে আসবে। একদিকে ভোটার তালিকায় স্বচ্ছতা আনার জন্য কমিশনের প্রযুক্তিনির্ভর পদক্ষেপ, অন্যদিকে ভোটাধিকার সুরক্ষা ও গোপনীয়তা নিয়ে নতুন বিতর্ক—উভয়ই আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতির ময়দানে  আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে।
  • Link to this news (আজকাল)