• শেষ অবধি লুকিয়ে রেখে অতর্কিতে হামলা, ট্রেনে চড়ল অগ্নি প্রাইম, জানেন যুদ্ধে কতটা এগিয়ে গেল ভারত?
    এই সময় | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্রের জগতে ভারত এক বড় নাম। অগ্নি, পৃথ্বী, ব্রহ্মোস, আকাশ, নাগ — একের পর এক উন্নত মানের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে চমকে দিয়েছে ভারত। বৃহস্পতিবার আরও এক ইতিহাস রচনা করল ভারত। এ দিন মাঝারি পাল্লার অগ্নি প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের একটি পরীক্ষায় সফল হলো ভারত। ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা সফল হবে, এতে নতুনত্ব কিছু নেই। নতুন বিষয়, এ দিন অগ্নি প্রাইম নিক্ষেপ করা হলো একটি ট্রেন থেকে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে ভারতীয় রেলওয়ের লোকোমোটিভ ইঞ্জিনে টানা একটি লঞ্চ বেড থেকে।

    রাশিয়া, আমেরিকা এবং চিন ছাড়া বিশ্বের আর কোনও দেশের এই ক্ষমতা নেই।বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পরীক্ষার একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘চলমান রেল নেটওয়ার্ক থেকে ক্যানিস্টারাইজড-লঞ্চ সিস্টেম তৈরি করেছে যে নির্বাচিত দেশগুলি, এই সফল পরীক্ষা ভারতকে সেই দলে জায়গায় করে দিল।’

    ভারতীয় সেনাবাহিনী এখন দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও অগ্নি প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে পারবে। যে জায়গায় সড়ক যোগাযোগ নেই অথচ ট্রেন চলে, সেই সকল জায়গা থেকেও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া যাবে। আর ভারতীয় রেলওয়ে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের মার্চ পর্যন্ত ভারতের মোট রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য প্রায় ৭০,০০০ কিলোমিটার।

    ট্রেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার আরও সুবিধা হলো শত্রুপক্ষের উপগ্রহের নজর থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে ট্রেনের সুড়ঙ্গে লুকিয়ে রাখতে পারবে সেনাবাহিনী। বিশেষ করে উৎক্ষেপণস্থলের কাছেই যদি কোনও সুড়ঙ্গ থাকে, তা হলে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সেই সুড়ঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র লুকিয়ে রাখতে পারবে বাহিনী। তার পরে সেখান থেকে রেল ট্র্যাক ধরে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে এনে অতর্কিতে হামলা চালানো যাবে।

    আবার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যখন শত্রুপক্ষের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করার সম্ভাবনা বেশি থাকে, সেই সময়েও ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে রেল-সুড়ঙ্গে লুকিয়ে রাখা যেতে পারে।

    তবে রেল-ভিত্তিক লঞ্চারের কিছু অসুবিধাও আছে। সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো রেল ট্র্যাকের বাইরে যেতে পারবে না লঞ্চারটি। ক্ষেপণাস্ত্রগুলি শুধুমাত্র রেল ট্র্যাক থেকেই উৎক্ষেপণ করা যাবে।

    বর্তমান সময়ে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাগুলি একেবারে নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত করে। সুনির্দিষ্ট ভাবে আঘাত করার জন্য লঞ্চারকেও সুনির্দিষ্ট জায়গায় স্থাপন করতে হয়। সেটা এই লঞ্চারের পক্ষে সম্ভব নয়।

    এ ছাড়া, কোনও ভাবে শত্রুপক্ষ যদি রেলপথ উড়িয়ে দেয়, তা হলে মাঝপথে আটকে যাবে এই লঞ্চার। ভারতের মতো বিস্তৃত রেল নেটওয়ার্ক জুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব।

  • Link to this news (এই সময়)