• ফেসবুক পোস্টে হাসির ইমোজি, ঠাকুরদার মৃত্যু নিয়েও ঠাট্টা! তর্কাতর্কির জেরে তরুণকে কুপিয়ে খুন
    আজকাল | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফেসবুক পোস্টের ইমোজি ঘিরে তুমুল বচসা। ঠাকুরদার মৃত্যু নিয়ে ঠাট্টা করায় প্রতিবাদ করেছিলেন তরুণ। সেই কথা কাটাকাটি থেকেই শুরু হাতাহাতি। অবশেষে তরুণকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের রাজকোটে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফেসবুকে পোস্টের জেরে ২০ বছর বয়সি এক তরুণকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে।‌ মৃতের নাম, প্রিন্স কুমার। ফেসবুক পোস্টে হাসির ইমোজি দেওয়ার কারণে বচসা। তার জেরেই প্রিন্সকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে বিপিন কুমার, রাজিন্দর গোন্দের বিরুদ্ধে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আরেক অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে। 

    তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রিন্স আদতে বিহারের বাসিন্দা। কিন্তু কর্মসূত্রে থাকেন গুজরাটে।‌ গুজরাটের একটি কারখানায় কাজ করতেন তিনি। সেই কারখানায় প্রিন্সের আরও তিন তুতো ভাই কাজ করেন। চার মাস আগেই প্রিন্সের ঠাকুরদা রূপনারায়ণ বিন্দ মারা যান। ঠাকুরদার স্মরণে তাঁকে নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন প্রিন্স। সেটি ফেসবুকের স্টোরিতে শেয়ার করেছিলেন। 

    সেই পোস্টের হাসির ইমোজি দিয়েছিল বিপিন। সেই কারণেই বিপিন ও প্রিন্সের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। বচসা ক্রমেই হাতাহাতিতে গড়ায়। ১২ সেপ্টেম্বর রাতে প্রিন্স কারখানার বাইরে অটোতে বসেছিলেন। সেই সময় ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রিন্সের উপর হামলা চালাতে ছুটে আসে বিপিন। কারখানায় পালিয়ে যাওয়ার সময়ে আরেক অভিযুক্ত প্রিন্সের পথ আটকায়। অশান্তি আরও তীব্রতর হয়ে ওঠে। তখনই প্রিন্সকে কুপিয়ে খুন করে বিপিন। 

    প্রিন্সের চিৎকার শুনেই স্থানীয়রা ও কারখানার কর্মীরা ছুটে আসেন। তড়িঘড়ি করে তাঁকে উদ্ধার করে রাজকোট সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গুরুতর চোট পেলেও জ্ঞান ছিল প্রিন্সের। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন পুলিশকে অভিযোগ জানান। তাঁর বয়ান রেকর্ড করে পুলিশ। কিন্তু চারদিন পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। ২২ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে প্রাণ হারান তিনি। 

    সোমবার অভিযুক্ত বিপিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আরেক অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। 

    প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই আরও একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল এই রাজ্যে। ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের কচ্ছ জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নক্ষত্রনা তালুকের নানা কাঁদিয়া গ্রামে ৪০ বছর বয়সি যুবতীকে গলা টিপে খুন করার অভিযোগ ওঠে তাঁর দুই সন্তানের বিরুদ্ধে। পুলিশি জেরায় মাকে খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নিয়েছে তারা। মৃত যুবতীর এক সন্তানের বয়স ১৯ এবং অন্যজন নাবালক। দু'জনকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

    তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, যুবতীর পরিবারের সকলেই গত বছর ধরে একটি ফার্মে কাজ করতেন। খুনের রাতে ফার্মেই কাজে ব্যস্ত ছিলেন যুবতীর বাবা। সেই সময় ওই ফার্মের মালিক যুবতীর বাবাকে জানান, দুই ছেলে মায়ের গলা টিপে খুন করেছে। খবর পেয়েই তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থলে পৌঁছন যুবতীর বাবা। বাড়িতে পৌঁছেই যুবতীর নিথর দেহ দেখতে পান বাবা। পাশাপাশি যুবতীর গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। 

    পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, দুই ছেলেই মায়ের আচরণে ক্ষুব্ধ ছিল। তাদের সন্দেহ ছিল, মা সম্ভবত কোনও বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত রয়েছেন। কী দেখে এমন সন্দেহ হয়েছিল? দুই সন্তান মাকে জানিয়েছে, রোজ মাঝ রাতে মা ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। কেউ মাকে প্রায়ই ফোন করতেন। কখনও কখনও বাড়ির কাজেও মন দিতেন না। তাদের সঙ্গে সময় কাটাতেন না মা। কথাও কম বলতেন। কারণ দিনের বেশিরভাগ সময় ফোনের মাকে সময় কাটাতে দেখা যেত। 

    ঘটনার দিন রাতেও মায়ের মোবাইল সেই নম্বর থেকে ফোন আসে। মা কাজ ফেলে রেখে ফোনে কথা বলতে শুরু করেন। সেই আচরণে আবারও রেগে যায় দুই ছেলে। ঘণ্টাখানেক পরে মায়ের গলা টিপে দুজনে খুন করে। এরপর সারারাত ফার্মে লুকিয়ে ছিল দুই ভাই। দাদু অভিযোগ দায়ের করতেই পুলিশ দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে। জেরায় তারা খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নেয়। 

    পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, যুবতী ২০ বছর আগে বিয়ে কয়েন। কিন্তু কয়েক মাস ধরে তিনি আর স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। দুই ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন। তাঁর স্বামী ঘটনার দিন কাজে ব্যস্ত ছিলেন। স্বামীর থেকে যুবতী আলাদা থাকতে শুরু করার পরেই দুই ছেলের সন্দেহ হয়েছিল। তাদের সন্দেহ ছিল, মা প্রেম করছেন। সেই প্রেমিকের কারণেই আর বাবার সঙ্গে থাকেন না। 

    পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত দুই সন্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলাও রুজু করা হয়েছে।‌ ঘটনার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। 
  • Link to this news (আজকাল)