আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিমান ভ্রমণ সাধারণত আরামদায়ক ও দ্রুত যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত হলেও কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত ঘটনা যাত্রীদের আতঙ্কিত করে তোলে। এরকমই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের দেবী আহল্যাবাই হোলকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, যেখানে বেঙ্গালুরুগামী এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে ইঁদুর কামড়ে দেয়।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়, ৩৩ বছরের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অরুণ মোদি স্ত্রীকে নিয়ে ডিপারচার লাউঞ্জে রিক্লাইনারে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময় একটি ইঁদুর তাঁর প্যান্টের ভেতরে ঢুকে গিয়ে হাঁটুর কাছে কামড়ে দেয়। হঠাৎ এই ঘটনায় দম্পতি চিৎকার করে ওঠেন এবং আশপাশের যাত্রী ও বিমানবন্দর কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
অরুণকে দ্রুত বিমানবন্দরের মেডিক্যাল রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। প্রথমিক চিকিৎসা দেওয়া হলেও যাত্রী নিজেই টিটেনাস ইনজেকশনের দাবি তোলেন। পরে তা দেওয়া হয়। তিনি বেঙ্গালুরু পৌঁছে যথাযথ চিকিৎসা নেন।
ইন্দোর বিমানবন্দরের পরিচালক ভি. কে. শেঠ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে থাকা পেস্ট কন্ট্রোল এজেন্সির ওপর আর্থিক জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। জানা গেছে, সর্বশেষ পেস্ট কন্ট্রোল করা হয়েছিল ১৫ সেপ্টেম্বর। তবে যাত্রীর অভিযোগ, ডিউটিতে থাকা চিকিৎসক সঠিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না। এই বিষয়ে চিকিৎসকের কাছ থেকে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এভাবে ইঁদুর অবাধে ঘুরে বেড়ানোয় যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দেশে যখন ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রচার চলছে, তখন এই ধরনের অবহেলা যাত্রী সুরক্ষার জন্য বড় হুমকি বলে মনে করছেন অনেকেই।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর ইন্দোরের এমওয়াই হাসপাতালে ইঁদুর কামড়ে দুই নবজাতকের মৃত্যু ঘটে, যা দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কয়েকদিন আগে একটি ইন্ডিগো ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছিল, কারণ এক যাত্রী বিমানের কেবিনে ইঁদুর দেখতে পান। ঘটনাটি শুধু যাত্রী নিরাপত্তাই নয়, বিমানবন্দরের রক্ষণাবেক্ষণ ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে কতটা কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।