আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের রাজধানীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাবেষ্টনীকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার রাতে ভোপালের অতি সুরক্ষিত চার ইমলি এলাকায় স্ত্রীর সঙ্গে নৈশভ্রমণে বেরিয়ে ছিনতাইবাজের কবলে পড়লেন স্বয়ং রাজ্যের ইনস্পেক্টর জেনারেল (আইজি) পদমর্যাদার এক শীর্ষ পুলিশকর্তা। বাইকে এসে দুই দুষ্কৃতী তাঁর দু’টি মোবাইল ফোন ছোঁ মেরে নিয়ে চম্পট দেয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, আক্রান্ত ওই কর্তা হলেন ২০০৫ ব্যাচের আইপিএস অফিসার এবং রাজ্যের গোয়েন্দা ও সন্ত্রাস দমন শাখার (এটিএস) আইজি আশিষ। ছিনতাই হওয়া ফোনে অত্যন্ত সংবেদনশীল ও গোপনীয় তথ্য ছিল বলে জানা গিয়েছে। খবর অনুযায়ী ঘটনার ২০ মিনিটের মধ্যেই একটি ফোন ঘটনাস্থলের কাছ থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। পুলিশের অনুমান, ফোনের অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে সেটিকে ফেলে পালায় দুষ্কৃতীরা। কিন্তু দ্বিতীয় ফোনটির হদিশ এখনও মেলেনি। তাতে একাধিক গোয়েন্দা তথ্য থাকতে পারে বলে আশঙ্কা। এই ঘটনায় বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার মধ্যে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ফোনটি সুইচড অফ হওয়ার আগে শেষবার কোলার গেস্ট হাউসের কাছে তার অবস্থান চিহ্নিত করা গিয়েছে। ক্রাইম ব্রাঞ্চ-সহ একাধিক থানার পুলিশকর্মীদের নিয়ে একটি বিশেষ দল গঠন করে চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়েছে। এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “গোপনীয় তথ্য ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা থাকায় আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছি।” আপাতত সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তিন জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তৃতীয় জনের খোঁজে তল্লাশি জারি।
ওই রাতেই শিবাজী নগর এলাকায় ঘটা আর একটি ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে এই দলের যোগ রয়েছে কি না, তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন তাও। যদিও সেই ঘটনার শিকার এক ছাত্র কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। উল্লেখ্য, চার ইমলি এলাকাতেই রাজ্যের ডিজিপি কৈলাস মাকওয়ানা, পুলিশ কমিশনার হরিনারায়ণচারী মিশ্র এবং প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র-সহ একাধিক মন্ত্রী এবং শীর্ষ আমলার বাস। এমন ভিআইপি এলাকায় অপরাধীদের এমন দৌরাত্ম্যে রাজ্য জুড়ে আলোড়ন পড়েছে।
আধিকারিকেরা স্বীকার করেছেন, যে রাস্তায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানকার অনেক ল্যাম্পপোস্ট অকেজো। এমনকী সিসিটিভিগুলিও পুরনো ও অধিকাংশই বিকল। টহলদারি বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হলেও বাসিন্দারা আশ্বস্ত হতে পারছেন না। এক বাসিন্দা প্রশ্ন তোলেন, “যদি একজন আইজি তাঁর নিজের বাড়ির সামনেই আক্রান্ত হতে পারেন, তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”
ভোপালে মোবাইল বা চেন ছিনতাইয়ের ঘটনা রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই ঘটনা এলাকাবাসীর কাছে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। এর কারণ দুষ্কৃতিরা এখন কড়া নিরাপত্তার এলাকায়ও স্বেচ্ছায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।