নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ডুয়ার্সের গোরুমারায় বেড়াতে এসে গবাদি পশু দিয়ে টানা গাড়িতে চেপে জঙ্গল ভ্রমণ! মুগ্ধ পর্যটকরা। লাটাগুড়ি থেকে যেসব পর্যটক কার সাফারি করে মেদলা ওয়াচ টাওয়ারে আসছেন, তারাই গবাদি পশুর গাড়িতে চড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। কালীপুর থেকে মেদলা ওয়াচ টাওয়ার পর্যন্ত প্রায় এক কিমি জঙ্গলপথ গবাদি পশুর গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পর্যটকদের। ওয়াচ টাওয়ার থেকে ডুয়ার্সের জঙ্গলের সৌন্দর্য ও বন্যপ্রাণী দর্শনের পর ফের গবাদি পশুর গাড়িতে করেই তাঁদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে কালীপুরে। সেখান থেকে পর্যটকরা জিপসিতে চেপে ফিরছেন লাটাগুড়িতে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে তো বটেই, কার সাফারিতে আসা-যাওয়ার পথে জঙ্গলের ভিতর থেকে হাতি, গণ্ডারকে উঁকি মারতে দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা। কখনও আবার সাফারির পথ আটকে দাঁড়িয়ে থাকছে বাইসন, হরিণ, ময়ূর। জিপসি কিংবা গবাদি পশুর গাড়িতে বসে সেই ছবি, ভিডিও মুঠোফোনে বন্দি করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না পর্যটকরা।তিনমাস বন্ধ থাকার পর ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে গিয়েছে ডুয়ার্সের জঙ্গল। প্রথম দিন থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করে দিয়েছেন ভ্রমণপিপাসুরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এখন জঙ্গল ভ্রমণে কোনও এন্ট্রি ফি দিতে হয় না পর্যটকদের। শুধুমাত্র গাড়িভাড়া ও গাইডের খরচটুকু দিয়েই তাঁরা সাফারি করতে পারেন। ফলে খুশি পর্যটকরা। গোরুমারার সহকারী বন্যপ্রাণ আধিকারিক রাজীব দে বলেন, জঙ্গল খোলার দিন থেকেই পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। তাঁরা সাফারিও করছেন। পুজোর সময় পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছি আমরা। মেদলায় গবাদি পশুর গাড়ির চালক সোনাতু রায় বলেন, লাটাগুড়ি থেকে কালীপুর পর্যন্ত জিপসিতে আসার পর পর্যটকরা আমাদের গাড়িতে চড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। মাথাপিছু ৬০ টাকায় জঙ্গলপথে প্রায় এক কিমি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পর্যটকদের। আবার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। গোরুমারায় শুধুমাত্র মেদলাতেই গবাদি পশু দিয়ে টানা গাড়ি রয়েছে। ফলে যাঁরা মেদলা ওয়াচ টাওয়ারে আসবেন, তাঁরাই এই গাড়িতে চড়ার সুযোগ পাবেন।গোরুমারার গাইড সুব্রত পাইক বলেন, লাটাগুড়িতে কার সাফারির জন্য ৭৮টি গাড়ি রয়েছে। পর্যটকরা আসছেন। তবে এখনও সেভাবে ঢল নামেনি। হোটেল, রিসর্টের বুকিং বলছে, পুজো শেষ হলেই গোরুমারায় প্রচুর পর্যটক আসবেন। তাঁর দাবি, এবারের বর্ষায় জঙ্গলে হাতি-গণ্ডারের প্রিয় ঘাস লাগানো হয়েছে। ফলে ওয়াচ টাওয়ার থেকে ভালোই বন্যপ্রাণী দেখা যাচ্ছে। সাফারি করা পর্যটকরা প্রত্যেকেই এসময় জঙ্গলে হাতি-গণ্ডার দেখতে পাচ্ছেন।