বারংবার বাংলায় বন্যার জন্য কেন্দ্রের উদাসীনতা এবং বঞ্চনাকেই দায়ী করলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানসরঞ্জন ভুঁইয়া। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, বন্যা নিয়ন্ত্রণ থেকে ড্রেজিং— প্রত্যেক খাতেই কেন্দ্রের বরাদ্দ শূণ্য। তবে মন্ত্রীর মত, বাংলা নদীমাতৃক রাজ্য হওয়ার দরুন এ রাজ্যে দুর্যোগের প্রভাব বেশি। তার উপর দোসর পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির বিপুল জলরাশি! বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে মানস বলেন, ‘দিল্লি, উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় চলছে।
সেই রাজ্যগুলির জন্য তো আমরা অপপ্রচার করিনি! বরং সহানুভূতিশীল হয়েছি। মানুষের মৃত্যু এবং প্রকৃতির রোষ রাজনৈতিক বিষয় হতে পারে না। কেন বাংলা বারবার প্লাবিত হয়? উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ডের বিপুল জলরাশি ফারাক্কা পেরিয়ে ধাক্কা দিচ্ছে মালদহ-মুর্শিদাবাদকে। গঙ্গা, পদ্মায় জলস্তর বাড়ছে। উত্তরাখণ্ড-বিহারের জল বাংলাকে প্লাবিত করছে কারণ পশ্চিমবঙ্গের ভূপ্রকৃতিই এমন।’ এরপরই কটাক্ষের সুরে মন্ত্রীর খোঁচা, ‘বিরোধীরা, একটু ভূগোল পড়ুন। বাংলার ভূপ্রকৃতি কেমন, তা জানুন।’
কলকাতার বানভাসী পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীদের কুৎসা অব্যাহত। বিশেষজ্ঞ মহলের মত, এই বিপুল পরিমাণ বৃষ্টি সামলানোর মত পরিকাঠামো কেবল কলকাতা নয়, ভারতের কোনো শহরেই নেই। এর প্রেক্ষিতে তথ্য তুলে মন্ত্রী বলেন, ‘এত বৃষ্টি এবং বজ্রপাত আমি আমার কর্মজীবনে দেখিনি। বিগত তিনদিন ধরে মুখ্যমন্ত্রী-সহ প্রত্যেক আপৎকালীন দপ্তর রাত জেগে কাজ করছে। কলকাতার জল নামতে শুরু করেছে কারণ গঙ্গার জলস্তর কমেছে। যাঁরা বাংলা নিয়ে কুৎসা করছেন, তাঁরা দিল্লির জলসম্পদ দপ্তরে গিয়ে খোঁজ নিন ২০১৫-র পর বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাংলাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছিল? যাঁরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়েও কুৎসা করছেন, তাঁরা বাংলার স্বার্থে ভাবেন?’
মন্ত্রী সংযোজন, ‘কান্দির জন্য ১০৩ কোটি এবং কেলেঘাইয়ের জন্য ১৬০ কোটি টাকা এখনও বকেয়া। তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করে ফারাক্কা বাঁধের জন্য একটি পরিকাঠামোর ঘোষণা করেছিলেন। এরপর নরেন্দ্র মোদীর সরকার ফারাক্কা ড্রেজিং করান? ২০২১-২৩ পর্যন্ত ২৩১ কিলোমিটার কলকাতার খাল ড্রেজিং করা হয়েছে। বর্তমানে ৪২ কোটি টাকার খরচে ৮৮ কিলোমিটার কলকাতার খাল ড্রেজিংর কাজ চলছে।’ এমনকি সুন্দরবন ডেল্টা প্রজেক্টের জন্যও কেন্দ্র অনুমতি দিচ্ছে না, এমনই অভিযোগ সেচমন্ত্রীর।