• জমা জলে হাজার হাজার গাড়ির ক্ষতি, রোদ উঠতেই গ্যারেজে ভিড়! পুজোর মুখে নাজেহাল মিস্ত্রি
    প্রতিদিন | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নব্যেন্দু হাজরা: কোনও গাড়িতে জল ঢুকে ইঞ্জিন বিকল। কোনওটার সেলফ স্টার্ট নষ্ট। গাড়ির সিট, ম‌্যাট, সাইলেন্সারে জল ঢুকে গিয়ে বেহাল দশা কোনওটার। বাস, ক‌্যাব, ট‌্যাক্সি, বাইক, ম‌্যাটাডোর–এই তালিকায় কে নেই!

    দুর্যোগ থামতেই গাড়ির অবস্থা দেখে মাথায় হাত মালিকদের। সোজা ফোন গ‌্যারেজে। কিন্তু সেখানের  অবস্থা আরও খারাপ। বিকল হয়ে যাওয়া গাড়ির লম্বা লাইন। কোনও গ‌্যারেজে দেড়, দু’শো গাড়ির লাইন পড়ে গিয়েছে। ফলে সেখানে গাড়ি দিলে কবে তা ‘সুস্থ’ হয়ে ফিরবে, তা কেউ জানে না। শহর-শহরতলির গ‌্যারেজে তিল ধারনের জায়গা নেই।

    ক‌্যাব অপারেটররা জানাচ্ছেন, অন্তত হাজার দুয়েকের বেশি ক‌্যাব খারাপ হয়ে গিয়েছে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে জলের স্রোতে বিগড়েছে কয়েকশো বাসও। ফলে পুজোর মুখে বেশ সমস‌্যায় গাড়ির মালিকরা। মঙ্গলবার সকালে যারা বাইক নিয়ে বেরিয়েছিলেন, তাঁদের সাইলেন্সারে জল ঢুকে অনেকেরই বাইক বিকল হয়ে গিয়েছে। এদিকে বহু গাড়ি এখনও রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। কারণ সেগুলো স্টার্টই করা যায়নি। আর এই ব্রেকডাউন গাড়িগুলোকে যারা তুলে নিয়ে যান, সেই সংস্থাগুলোর অবস্থা সবথেকে খারাপ। ফোনের বন‌্যা তাঁদের কাছে। দিশাহারা অবস্থা কলকাতার টোয়িং সংস্থাগুলির। রাস্তায় রাস্তায় জলে ডুবে থাকা গাড়ি তুলে দেওয়ার কাতর আর্জি আসছে সেখানে। এই সব সংস্থার মালিকদের কথায়, আমফানের সময়ও এমন ফোন আসেনি।

    সোমবার রাতের ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গোটা কলকাতা। কোথাও মাঝরাস্তায়, কোথায় পার্কিংয়ে জলে ডুবে গিয়েছে প্রচুর গাড়ি, বাস। এই পরিস্থিতিতে পরিষেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে টোয়িং সংস্থাগুলিকে। গাড়ি টানার মতো গাড়ি তাদের নেই। রাস্তা, পার্কিং থেকে গাড়ি তুলতে হচ্ছে। ফোন এসেই চলেছে তাদের। সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে তারা পৌঁছচ্ছে বিভিন্ন গ‌্যারেজে। তার জন‌্য লাগছে হাজার দেড়েক টাকা।  আর গাড়ির সারাতে একেকজনের অন্তত ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানাচ্ছেন ক‌্যাবচালকরা। শুধু ক‌্যাব বা বেসরকারি গাড়ি নয়, শ’য়ে শ’য়ে বাসের জায়গাও হয়েছে গ‌্যারেজে।

    তবে ব‌্যক্তিগত গাড়ি জলে ডুবেছে সবথেকে বেশি। বলছিলেন ব্রেকডাউন হওয়া গাড়ি টেনে নিয়ে যাওয়ার সংস্থার এক মালিক। প্রচুর ফোন বিভিন্ন আবাসন থেকে এসেছে। বেশি ফোন আসছে বড় বড় আবাসনের বেসমেন্ট থেকে গাড়ি বার করার জন্য। গ‌্যারেজ থেকে সার্ভিস সেন্টারে পৌঁছোচ্ছে সেই গাড়ি। কিন্তু সেখান থেকে কবে বেরোবে তা জানাতে পারছেন না সংস্থার মালিকরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, সকলের একই কথা— ব্রেকডাউন! গাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে! দোকানে প্রচুর গাড়ি জমে গিয়েছে। কবে যে কি হবে! অনলাইন ক‌্যাব অপারেটর্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ‌্যায় বলেন, “হাজার দুয়েক গাড়ি অন্তত খারাপ হয়ে গিয়েছে। গ‌্যারেজে গিয়েছে। ফলে রাস্তায় কিছুদিন গাড়ির টান থাকবে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)