সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘গণবিক্ষোভে’ অগ্নিগর্ভ লাদাখে হঠাৎ ঘুরে গেল ঘটনার মোড়। পুলিশকে আক্রমণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন দুই নেপালি নাগরিক। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে দু’জনেই গুলিতে আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৬০ জন বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার হয়েছেন। যদিও তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, লাদাখের গণবিক্ষোভে চারজন নেপালি নাগরিক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকি দু’জনের চিকিৎসা চলছে। গ্রেপ্তার হওয়া বিক্ষোভকারীদের শারীরিক পরীক্ষার জন্য স্থানীয় এসএনএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর তাঁদের আদালতে পেশ করা হবে। শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি ছিল এই ঘটনার পিছনে বিদেশি মদত রয়েছে। নেপালি নাগরিকদের গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা সরকারের এই দাবিকে আরও জোরদার করেছে।
অন্যদিকে, জলবায়ু কর্মী সোনম ওয়াংচুকের প্রতিষ্ঠান স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অফ লাদাখ (SECMOL)-এর বিদেশি লগ্নি পাওয়ার লাইসেন্স বাতিল করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এই আইন একাধিকবার লঙ্ঘন করার অভিযোগ তুলে লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বহু নেতা সোনমকে অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও তিনি শোনেননি। আরব বসন্তের কায়দায় বিক্ষোভে উসকানি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, নেপালের জেন জি আন্দোলনের উল্লেখ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন।’
রাজ্যের মর্যাদা-সহ একাধিক দাবিতে বৃহস্পতিবার ‘গণবিক্ষোভ’ শুরু হয়েছে লাদাখে। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় লেহ-লাদাখের বাসিন্দা ‘জেন জি’দের। এই বিক্ষোভে এখনও পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৭০ জন। এই পরিস্থিতিতে লাদাখে হিংসা ছড়ানোর জন্য জলবায়ু আন্দোলনকর্মী সোনম ওয়াংচুককেই কাঠগড়ায় তুলেছে কেন্দ্র। পাশাপাশি, ভাঙচুর এবং বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করার জন্য নাম জড়িয়েছে স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলার ফুন্টসগ স্ট্যানজিন সেপাগেরও।
লাদাখের এই আন্দলনে, পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয় পাথর। একাধিক পুলিশ ভ্যান জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও খবর। এমনকী ক্ষুব্ধ জনতা বিজেপি দপ্তরেও আগুন লাগিয়ে দেয়। এই অবস্থায় হিংসাত্মক আন্দোলন রুখতে প্রশাসন কারফিউ জারি করেছে। প্রশাসনের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘লেহতে পাঁচ বা তার বেশি লোকের সমাবেশ নিষিদ্ধ। পূর্ব লিখিত অনুমোদন ছাড়া কোনও মিছিল, সমাবেশ বা পদযাত্রা করা যাবে না।’ উল্লেখ্য, এদিন আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল লেহ অ্যাপেক্স বডি (LAB)-র যুব শাখা।