• লাদাখ হিংসায় বিদেশি শক্তি? ‘র‌্যাঞ্চো’ সোনাম কেন পাকিস্তানে? সিবিআই তদন্ত
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: থ্রি ইডিয়টসের রঞ্ছোরদাস চাঁচড় বা ‘র‌্যাঞ্চো’ শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের চোখে বিদেশি এজেন্ট? লাদাখে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা অসন্তোষ এবং হিংসার জন্য ‘র‌্যাঞ্চো’ সোনাম ওয়াংচুকের নামই তুলে এনেছে কেন্দ্র। শুরু হয়েছে সিবিআই তদন্ত। এবং তা নাকি শুরু হয়েছে দু’মাস আগেই। এখানেই শেষ নয়। বুধবার ওয়াংচুকের অনশনস্থল থেকে লাদাখের আগুন জ্বলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর স্বেচ্ছাসেবী  সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন? অভিযোগ একঝাঁক। সেই সব অভিযোগ ও প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানেই কেন্দ্রীয় এজেন্সি। কখনও দেড় কোটি, কখনও ৬ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন হয়েছে ওয়াংচুকের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অব অলটারনেটিভের তহবিলে। কারা পাঠাল সেই বিপুল অর্থ? কী কারণে? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মনে করছে নেপাল, বাংলাদেশের ধাঁচে জেন-জি আন্দোলন করে চরম অস্থিরতা তৈরির পিছনে লাদাখের ‘র‌্যাঞ্চো’ হিসেবে পরিচিত সোনামের প্ররোচনা‌ই কাজ করেছে। সঙ্গে আর একটি প্রশ্ন— হঠাৎ গত ৬ ফেব্রুয়ারি ওয়াংকচুক পাকিস্তানে গিয়েছিলেন কেন? শুধুই কি পরিবেশ সম্মেলন? নাকি অন্য কিছু? সোনাম কিন্তু বলেছেন, ‘দোষ চাপানোর জন্য ওরা এখন বলির পাঁঠা খুঁজছে। বলছে, আমার এনজিওতে বিদেশি অর্থ আসে। আফগানিস্তানের জন্য আমাদের তৈরি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়েছিল রাষ্ট্রসংঘ। সে জন্য তারাই অর্থ দিয়েছিল আমাদের। বিদেশের অনুদান আমার চাই না বলেই এফসিআরএ অনুমোদন রাখিনি। রাষ্ট্রসংঘেরটা পারিশ্রমিক। তার জন্য ট্যাক্স দিয়েছি আমরা। যেভাবে সুইজারল্যান্ড, ইতালির সংস্থা আমাদের প্রযুক্তিগত শিক্ষার জন্য পারিশ্রমিক দিয়ে থাকে।’

    সোনাম ওয়াংচুককে অনেকেই বলে, লাদাখের গান্ধী। পরিবেশ রক্ষা, কিংবা লাদাখের রাজ্য মর্যাদা ফেরানোর লড়াই। একের পর এক দাবিতে তিনি সত্যাগ্রহ করেছেন। সম্প্রতি শুরু করেছিলেন আমরণ অনশন। তাঁর অনশনমঞ্চে দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। তারপরই অগ্নিগর্ভ হয়ে যায় লাদাখ, লে এমনকী কারগিলের একাংশও। আগুন জ্বলে হিমালয়ের কোলে। অগ্নিগর্ভ লাদাখের একটা‌ই দাবি, ফিরিয়ে দিতে হবে রাজ্যের মর্যাদা। কেন বারংবার কেন্দ্র এই প্রতিশ্রুতি দিয়েও পিছিয়ে যাচ্ছে কেন? ওয়াংচুকের দাবির সমর্থনে ময়দানে নেমেছে লে অ্যাপেক্স বডি এবং কারগিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স। চীন সীমান্তের শান্ত লাদাখে হঠাৎ এই অস্থিরতা ও অশান্তির জেরে কেন্দ্র বস্তুত বুধবার থেকেই  দিশাহারা। রাতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক স্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে ওয়াংচুককে দায়ী করেছে। এবার খোঁজ চলছে বিদেশি অর্থের। সেই তদন্তের গতিপ্রকৃতি এতই দ্রুত যে, একদিনের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লাইসেন্স বাতিল হয়েছে। এর আগে লাদাখ উন্নয়ন পর্ষদ তাঁর সংস্থাকে দেওয়া জমির বরাদ্দও বাতিল করেছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছে, লাদাখ ও কাশ্মীরের রাজ্য মর্যাদা ফেরানো নিয়ে আলোচনা চলছে। অক্টোবর মাসে বৈঠক রয়েছে দিল্লিতে। অথচ তার মধ্যেই এভাবে কেন আগুন জ্বালানো হল লাদাখ ও লে অঞ্চলে? এটাই রহস্যজনক। 
  • Link to this news (বর্তমান)