পান্তা খেয়ে দশমীতে কৈলাসে ফেরেন দেবী দুর্গা। পান্তা প্রসাদ বিলি করা হয় ভক্তদেরও। এমনই রীতি প্রচলিত রয়েছে ময়নাগুড়ির ময়নামাতা কালীবাড়ির দুর্গাপুজোয়। এবার ১০৬ বছরের পুজো ময়নামাতা কালীবাড়ি দুর্গাপুজো কমিটির। অষ্টমীতে কুমারী পুজোর করা হয় এখানে। ময়নাগুড়ির এমন কোনও লোক নেই যিনি পুজোর দিনগুলি একবারের জন্য হলেও এখানে দুর্গাপুজো দেখতে আসেন না। অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পুজো হয়ে আসছে।
ময়নামাতা কালীবাড়ি দুর্গাপুজো কমিটির এবছর সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন দেবেশ বল, সহ সভাপতি রামমোহন রায়। সম্পাদক বিমান রায় চৌধুরী ও সুব্রত কর্মকার, সহ সম্পাদক শান্তনু দত্ত ও মৃণালকান্তি সরকার। কোষাধ্যক্ষ অসীম চট্টোপাধ্যায়, সহ কোষাধ্যক্ষ শিবু গোপ। হিসেবরক্ষক আবির দাস ও সুনীল কর্মকার।
ময়নাগুড়ির এই পুজো ময়নাগুড়িবাসীর আবেগ। প্রতিবছর এই পুজোয় পাঁচ শতাধিক ভক্ত ভোগ নিবেদন করেন। দশমীতে এখানে অপরাজিতা পুজো হয়। পুজোতে যেসমস্ত সামগ্রী ব্যবহার করা হয় সেগুলি সহ দেবতাদের অস্ত্রও পুজো করা হয়। এরপর ভক্তদের আশীর্বাদ স্বরূপ সেগুলি কপালে ঠেকানো হয়। তারপর ভক্তদের হাতে আশীর্বাদ সুতো বেঁধে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মায়ের প্রসাদ পান্তাভাত ও বোঁদে ভক্তদের বিতরণ করা হয়। ময়নাগুড়িবাসী সারা বছর মায়ের এই আশীর্বাদ গ্রহণ করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন।
বরাবরের মতো এবারও প্রতিমা ময়নামাতা কালীবাড়িতেই তৈরি করা হয়েছে। একই কাঠামো দিয়ে প্রথম থেকেই প্রতিমা গড়া হচ্ছে। বিসর্জনের পর সেই কাঠামো নদীর জল থেকে তুলে নিয়ে আসা হয়। বছর ঘুরলে সেই কাঠামোতে প্রতিমা তৈরি হয়। এবারে প্রতিমা তৈরি করছেন ময়নাগুড়ির শিল্পী বুলেট রায়। মণ্ডপ ও আলোক সজ্জার কাজ করছেন মানিক রায়।
কোষাধ্যক্ষ অসীম চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই পুজোতে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। দিনরাত ভিড় থাকে। কুমারী পুজোতে ভিড় উপচে পড়ে। ময়নাগুড়িবাসী সারা বছর পুজোর দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন।