জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ অবৈধ ঘোষণা হাইকোর্টের, পূর্ব মেদিনীপুরে থমকে গেল ৩৮ শিক্ষকের স্কুলে ফেরা
বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: হাইকোর্ট পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। এই অবস্থায় ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলের এই জেলায় যোগ্য ৩৮ জন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষকের প্রাথমিক স্কুলে ফেরার প্রক্রিয়া ধাক্কা খেল। ২৩সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা দলবেঁধে গিয়ে আগে প্রাইমারিতে চাকরি এবং তারপর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে চাকরি করার যাবতীয় নথি জমা করেছেন। যোগ্য শিক্ষক হিসেবে শেষ মাসে মাইনে পাওয়ার স্লিপও জমা করেছেন। কিন্তু, হাইকোর্ট জেলা বিদ্যালয় সংসদকে অবৈধ ঘোষণা করায় তাঁদের পুনর্নিয়োগ আপাতত আটকে। এপ্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাইমারি বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, সংসদকে অবৈধ নির্দেশ দেওয়ার ঘটনায় পুনর্নিয়োগে কোনও সমস্যা হবে না। তাছাড়া ওই ইস্যুতে আমরা ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছি।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসি পুরো প্যানেলকে অবৈধ ঘোষণা করার পর যোগ্যরা এসএসসি পরীক্ষায় বসেছেন। তাঁদের সঙ্গে ফ্রেশাররাও পরীক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু, এই পরীক্ষায় আস্থা না রেখে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রাইমারির শিক্ষকতা ছেড়ে এসএসসি দিয়ে চাকরি পাওয়া ৩৮জন যোগ্য শিক্ষক পুনরায় প্রাথমিকে ফিরে যেতে চান। সেই তালিকায় হলদিয়া চকদ্বীপা হাইস্কুলে সহশিক্ষক কার্তিক আদক থেকে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের কাঞ্চননগর দিদারুদ্দিন বিদ্যাভবন উচ্চ মাধ্যমিকের সহ শিক্ষক সুমন বেরা, মেচগ্রাম পূর্ণচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ে সহ শিক্ষিকা খিলখিল তুঙ্গ সহ মোট ৩৮জন আছেন। কার্তিকবাবু তমলুক ব্লকে উত্তর হরশঙ্কর বোর্ড প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তাঁর বাড়ি পাঁশকুড়া থানার চাকদহ গ্রামে। সুমনবাবু তমলুক ব্লকে বড়বড়িয়া প্রাইমারি স্কুলের সহ শিক্ষক ছিলেন। খিলখিলদেবী তমলুক ব্লকে ভুবনকালুয়া নারায়ণী প্রাইমারি স্কুলের সহ শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁরা সকলেই ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে প্রাইমারি চাকরি ছেড়ে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে জয়েন করেছিলেন।
গত ৮আগস্ট রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে ওই ৩৮জন শিক্ষক শিক্ষিকার নাম পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাইমারি বিদ্যালয় সংসদে এসেছে। তাঁরা সকলেই প্রাইমারিতে ফেরার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। সেইমতো তাঁদের নামের লিস্ট পর্ষদ থেকে জেলায় পৌঁছয়। তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর নথি চেয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। সেইমতো সকলে নথি জমা করেছেন। কিন্তু, হাইকোর্ট সংসদকে অবৈধ ঘোষণা করায় পুনর্নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে।
শিক্ষক কার্তিক আদক বলেন, আমরা ৩৮জনই ২৩সেপ্টেম্বর তমলুকে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ অফিসে গিয়ে প্রাইমারি এবং হাইস্কুলে চাকরির নথি জমা করেছি। যোগ্য শিক্ষক হিসেবে শেষ মাসের মাইনের কপিও দিয়েছি। কিন্তু, ওইসব নথি জমা নেওয়ার পর সংসদ অফিস থেকে কোনওরকম আশ্বাস দেওয়া হয়নি। কারণ হিসেবে তাঁরা হাইকোর্টের নির্দেশের কথা জানিয়েছেন। এরফলে পুনর্নিয়োগ প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। আমরা কবে হাইস্কুল থেকে প্রাইমারিতে ফিরতে পারব তা জানি না।