• পাড়ায় সমাধান শিবিরের ১২০৭টি প্রকল্পের টেন্ডার সম্পূর্ণ, কাজ শুরু হবে পুজোর পর
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: পুজোর আগেই নদীয়া জেলায় পাড়ায় সমাধান শিবিরের ১২০৭টি প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হল। ওয়ার্ক অর্ডার মিললেই সেগুলোর কাজ শুরু হবে। যদিও তা হবে পুজোর পর। সব মিলিয়ে জেলাজুড়ে মোট ১০ হাজারটি প্রকল্প জমা পড়েছে। যার মধ্যে আড়াই হাজারের বেশি প্রকল্পের অনুমোদন এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। রাস্তা, আলোর পাশাপাশি স্কুল ও আইসিডিএস বিল্ডিং সংস্কারের প্রকল্প বেশি সংখ্যায় জমা পড়েছে। কারণ দেখা যাচ্ছে, ৩০ শতাংশ রাস্তার প্রকল্প, ২৫ শতাংশ লাইটের প্রকল্প এবং স্কুল ও আইসিডিএসের বিল্ডিং সংস্কারের জন্য ১৫ শতাংশ প্রকল্প জমা পড়েছে। এই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নিরিখে এগিয়ে রয়েছে রানাঘাট-১, তেহট্ট-১, নাকাশিপাড়া ও হাঁসখালি ব্লক। সেইসঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই রাজ্য সরকারের অভিনব উদ্যোগে ভালো সাড়াও মিলেছে। বিগত আড়াই মাসেই জেলার বিভিন্ন শিবিরে ভিড় করেছেন ১৪ লক্ষের বেশি মানুষ। 

    নদীয়া জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অনুপকুমার দত্ত বলেন, বহু প্রকল্প জমা পড়ছে। সেগুলোর সব দিক খতিয়ে দেখে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। 

    গত ২ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হল, এলাকার উন্নয়নের পরিকল্পনা ঠিক করবেন এলাকার মানুষই। গ্রামের বাসিন্দারা মুখোমুখি আলোচনায় জানাতে পারবেন, তাঁদের জন্য কোন কাজটি সবচেয়ে জরুরি। সেই মতামতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কোন প্রকল্প আগে করা হবে এবং কীভাবে তা সম্পন্ন হবে।

    এই উদ্যোগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা কিছুটা হলেও কমানো হয়েছে। এর বদলে, প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ব্লক প্রশাসনের হাতে। কর্মকর্তাদের মতে, এতে একদিকে কাজের স্বচ্ছতা বাড়বে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের চাহিদা পূরণও সহজ হবে। তাতেই নিজের সুবিধার্থে সাধারণ তাদের ইচ্ছেমতো প্রকল্প জমা দিচ্ছেন। সেইমতো রাজ্য থেকেও মন্ত্রী পাঠানো হচ্ছে শিবিরকে আরও বেশি জনসংযোগমূলক করে তোলার জন্য। সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সহ রাজ্যস্তরের মন্ত্রীরা নদীয়া জেলার আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। 

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত আড়াই মাসে নদীয়া জেলায় মোট ১৪২৭টি শিবির হয়েছে। অর্থাৎ ৩৭৫২টি বুথের মানুষ পাড়ায় সমাধান শিবিরে যোগদান করেছেন। যেখানে জমা পড়েছে টোটাল ৪১ হাজার ৩৬০টি প্রকল্প। যার মধ্যে ১০ হাজার ৫০৬টি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য এসেছে। যার মধ্যে ২৫৪৫টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যেখানে ১২০৭টি প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, রানাঘাট-২ ব্লকের ১০৬টি প্রকল্প, হাঁসখালি ব্লকের ৮৭টি প্রকল্প এবং নাকাশিপাড়া ব্লকের ১১১টি প্রকল্প রয়েছে। 

    প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, বুথ পিছু ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে ছোট ছোট বহু প্রকল্প জমা পড়ছে। তাই একটি করে প্রকল্পের টেন্ডার না করে, অনেক প্রকল্পকে নিয়ে একসঙ্গে একটি টেন্ডার করা হচ্ছে। যাতে দ্রুত কাজ হয়। ইতিমধ্যেই টেন্ডার প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়েছি। 

    প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এখনো পর্যন্ত পাড়ায় সমাধান শিবিরে ১৪ লক্ষ ২ হাজার ১৯৮ জন এসেছেন। তেহট্ট-১ ব্লকে সর্বাধিক গড়ে ৫৫০ জন এবং কৃষ্ণনগর-১ ব্লকে সর্বাধিক গড়ে ৫২৬ জন করে এসেছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রতিদিন বিভিন্ন বুথে শিবিরের আয়োজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছেও জনসংযোগের মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)