• অসুর বৃষ্টি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও আরামবাগের একাধিক পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া, আরামবাগ ও পুরুলিয়া: কখনও ঝমঝমিয়ে, আবার কখনও ঝিরঝিরে বৃষ্টি। তারপরেও মানুষজনকে ঘরে আটকে রাখা গেল না। অসুর বৃষ্টিকে কার্যত বধ করেই বিগবাজেটের পুজো মণ্ডপগুলিতে দর্শনার্থীরা ভিড় করলেন। বৃহস্পতিবার তৃতীয়াতেও বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও আরামবাগের বেশ কয়েকটি পুজো মণ্ডপের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে সেখানে এদিন উন্মাদনা ছিল অন্যরকম। তবে এখনও তিন জায়গায় অনেক মণ্ডপে শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। 

    বাঁকুড়া শহরের ফিডার রোড এলাকার গৃহবধূ উর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিন প্রতিমা দর্শনে বের হওয়ার কথা ছিল না। ওই বধূর স্বামী একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। ফলে রবিবার থেকে সপরিবারে মণ্ডপে ঘোরার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু, পটকার শব্দ ও মণ্ডপের মাইকের আওয়াজ শুনে ওই বধূর চার বছরের যমজ সন্তান দুপুর থেকেই ঠাকুর দেখার বায়না ধরে। সন্ধ্যা নামতেই ছেলেদের আবদার মেটাতে উর্মিলাদেবীকে শহরে প্রতিমা দর্শনে বের হতে হয়। 

    ওন্দার বাসিন্দা কৃষ্ণা ঘোষ আবার এদিন বাঁকুড়া শহরে বাজার করতে এসে কলেজপড়ুয়া মেয়ের কাছেই প্রতিমা দর্শনের ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। কৃষ্ণাদেবীর মেয়ে বাঁকুড়া শহরের সারদামণি মহিলা কলেজে পড়েন। এদিন সহপাঠীদের সঙ্গে তাঁর ঠাকুর দেখার কথা ছিল। ফলে মাকে তড়িঘড়ি কয়েকটি মণ্ডপ ঘুরিয়ে তিনি বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ওই কলেজ পড়ুয়া বলেন, বান্ধবীদের সঙ্গে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরার মজাই আলাদা। তা কি আর মায়ের সঙ্গে প্রতিমা দর্শনে গেলে পাওয়া যাবে!

    এদিন মুখ্যমন্ত্রী বাঁকুড়ার আটটি পুজোর উদ্বোধন করেন। শহরের লালবাজারের একটি মণ্ডপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুরসভার চেয়ারম্যান অলকা সেনমজুমদার, বাঁকুড়ার জেলাশাসক সিয়াদ এন ও পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি উপস্থিত ছিলেন। বাঁকুড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অর্চিতা বিদ বলেন, এদিন মুখ্যমন্ত্রী বড়জোড়ার একটি পুজোর উদ্বোধন করেন। বৃষ্টির কারণে সন্ধ্যার পর বড়জোড়াবাসী প্রতিমা দর্শনে বিশেষ বের হয়নি। ফলে মণ্ডপগুলিতে ভিড় ছিল না।   

    তৃতীয় পর্যায়ে এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পুরুলিয়া জেলার মোট ৮টি পুজোর উদ্বোধন হল। এদিন মানবাজার মহকুমার পুঞ্চায় পাড়ুই সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজো উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু সহ অন্যান্যরা। শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত জেলার মোট ৩৩টি পুজোর উদ্বোধন হল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে। উদ্বোধন পর্ব চলাকালীন এদিনও জেলার একাধিক পুজো মণ্ডপে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির ছবি নজরে এসেছে। কোথাও আলোক সজ্জার কাজ চলছিল, আবার কোথাও শেষ তুলির টান দেওয়া হচ্ছিল। যদিও এরই ফাঁকে একদল দর্শনার্থী পুজোর বাজারে কেনাকাটার ফাঁকে মণ্ডপে মণ্ডপে উঁকি মারতে শুরু করেছেন। সেইসঙ্গে কোন পুজো মণ্ডপের দরজা কবে সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে, তারও খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছেন।

    আরামবাগ মহকুমায় এদিন বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মোট চারটি পুজোর উদ্বোধন করেন। ওইসব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরামবাগের সংসদ সদস্য মিতালি বাগ সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। এদিন শহরে প্রতিমা দর্শনে বের হওয়া গীতা রায় বলেন, এদিন মণ্ডপগুলিতে সেভাবে ভিড় জমেনি। দুপুরে বৃষ্টি হওয়ায় অনেকেই বাড়ি থেকে বের হয়নি। সন্ধ্যায় আরামবাগের বাজারগুলিতে কেনাকাটার ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)