নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: কয়েক বছর আগেও গ্রামে বা আশপাশে কোনও পুজো হতো না। পুজোর কয়েকদিন মন ভারাক্রান্ত হতো বাসিন্দাদের। সিউড়ি শহর বা পুরন্দরপুর কিছুটা দূরে হওয়ায় সেখানে গিয়ে পুজো দেখার সাধ্য ছিল না অনেকের। শিশুরা পুজো দেখতে যাওয়ার আব্দার করত। শহরে গিয়ে তাদের পুজো দেখাতে পারতেন না মায়েরা। গ্রামের বাসিন্দাদের কথা ভেবে সিউড়ির গাংটেতে দুর্গাপুজোর আয়োজন করছে পাঁউশি অন্ত্যোদয় অনাথ আশ্রমের বীরভূম জেলা শাখা। এবার আশ্রমের পুজো পঞ্চম বর্ষে পড়ল। মণ্ডপে ঢাকের আওয়াজ, পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চরণে গমগম করে পুজোর কয়েকটা দিন।
পুজোর কয়েকদিন আশ্রমে আনন্দে মাতেন গ্রামের বাসিন্দারা। করোনা পরিস্থিতির সময় থেকে সারা বছরই আশ্রমে অসহায়দের খাওয়ানো হয়। পুজোর কয়েকদিন ভূরিভোজের ব্যবস্থা থাকে। প্রায় মাসখানেক ধরে আশ্রমে পুজোর যাবতীয় আয়োজন চলছে। প্রতিমা তৈরি থেকে আলপনায় সেজে উঠছে চারপাশ। আশ্রম পরিচালিত স্কুলের বেশিরভাগ পড়ুয়াই অত্যন্ত দুঃস্থ পরিবারের। তারাও সকলের সঙ্গে পুজোর আনন্দে মেতে উঠবে। আশ্রমের কর্ণধার বলরাম করণ বলেন, এখানে আগে কোনও পুজো হতো না। সেকারণে আনন্দে মেতে উঠতে পারতেন না শিশু-মহিলা সহ বাসিন্দারা। পুজোর সময় সকলের মন খারাপ থাকত। তাই আমরাই উদ্যোগ নিয়ে পুজো শুরু করি। এখানে সবাই একসঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন। গ্রামের অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও দুঃস্থদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সাধ্যমতো পোশাকও দেওয়ার চেষ্টা করি। আশ্রমের পক্ষে মনা বৈদ্য বলেন, গ্রামের সকলের সাহায্যে পুজো করা হয়। সেকারণে পুজো চালিয়ে যেতে পারছি। পুজোর কয়েকদিন সকলে এখানে এসে নিজেদের মতো আনন্দ-উন্মাদনায় মাতেন। বাসিন্দাদের জন্য স্বাস্থ্য শিবির, চোখের ছানি অপারেশন, দুঃস্থ পরিবারের ছেলে-মেয়েদের গণবিবাহের আয়োজন থেকে নানা ধরনের কাজ করা হয়। আগামী দিনেও সকলের সহযোগিতা কামনা করি। রাজ্য সরকারের অনুদান পেলে এই পুজো চালিয়ে নিয়ে যেতে সুবিধা হবে। আশ্রমের বীণা বৈদ্য, তন্ময় বৈদ্য বলেন, গত কয়েকদিন ধরে প্রতিমা তৈরি থেকে যাবতীয় আয়োজন করা হয়েছে। গ্রামের অনেকে আমাদের সঙ্গে হাত হাত লাগিয়ে কাজ করছেন। পুজোর কয়েকদিন সকলে এখানে এসে আনন্দ করেন। • নিজস চিত্র