• নারী শক্তি-যাযাবর-ভ্রূণ, থিমের বাহার ফলতায়
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • বিমল বন্দ্যোপাধ্যায়  বজবজ

    শৈশব অবস্থা থেকে জীবনযুদ্ধে নামতে হয় মেয়েদের। বিশেষ করে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা পরিবারের মেয়েদের পক্ষে এ লড়াই হয় আরও কঠিন। কোনওরকমে পড়াশোনা করে একটু বড় হলেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। তারপর সংসার সামলানো থেকে শিশুর জন্ম দেওয়া এবং তাকে বড় করে তোলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়। রোজগারের জন্য কাজও করতে হয়। লড়াই সামলাতে সামলাতে নারীর ভিতর জন্ম নেয় শক্তি। সেই নারীর শক্তির সমন্বয়কেই এবার পুজোয় তুলে ধরছে ফলতার কামারডাঙা বান্ধব সমিতি। তাদের থিম, ‘নারী শক্তি’। ২৪ তম বর্ষে পা দিয়েছে এই পুজো। শিল্পী চন্দন মণ্ডল নারীশক্তির বিভিন্ন পর্যায়কে নিখুঁতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তাঁকে সাহায্য করছে সমিতির কচিকাঁচা সদস্যরা। পুজো কমিটির সম্পাদক নীলরতন পাল এবং তন্ময় নস্কর বলেন, সংসারে এবং কর্মজগতে নারী শক্তির কারণেই সব মঙ্গলময়। এই কারণে অসুরশক্তিকে নাশ করতে দুর্গার মতো নারীকে দেবতারা তাঁদের সমস্ত শক্তি অর্পণ করেছেন। মুনিঋষিরাও বলেছেন, মাতৃশক্তি ছাড়া বিশ্ব কখনও আনন্দময় হতে পারে না। আমাদের পুজো মণ্ডপ থেকে প্রতিমা সব জায়গাতেই এই ভাবনার প্রতিফলন।

    ফলতার কোটালডাঙার জাগৃতি সংঘ সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এবার ১৯ বছরে পা দিল। তাদের পুজোর থিম, ‘ওরাও মানুষ’। কমিটির সম্পাদক পলাশ পাত্র বলেন, মানুষের ভিতর দেবতা বাস করেন। সেই কারণেই সবসময় মানুষের ভিতরের দেবত্বকে সম্মান জানানো উচিত। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই এবার বেদেদের জীবন জীবিকা এবং সংস্কৃতি তুলে ধরে মণ্ডপ সাজানো হয়েছে। একেবারে ভিন্ন সমাজ যাযাবরদের। অনবরত তাঁদের অবহেলা ও অসম্মান বইতে হয়। এবার ওঁদের জীবন সামনে আনা হয়েছে। প্রতিমা সাবেকি ঘরানার। 

    ফলতার ফতেপুর যতীন্দ্রভবন দুর্গোৎসব এবার ৮১ তম বছরে পা রাখল। প্রথম দিকে বৈদ্যদের বাড়ির পুজো ছিল। এখন বারোয়ারি তকমা পেয়েছে। কমিটির সম্পাদক বিধানচন্দ্র বৈদ্য বলেন, আমাদের ভাবনা হল, ‘মা আমি পৃথিবী দেখতে চাই’। মাতৃ জঠরে ভ্রূণ তৈরি থেকে ধীরে ধীরে ১২ টি পর্যায় অতিক্রমের পর শিশুর রূপান্তরের ছবি তুলে ধরা হচ্ছে। মণ্ডপের বাইরে ১২টি মাটির খোপ তৈরি করে এই পর্যায় দেখানো হবে মডেল ও আলোর মাধ্যমে। দেবী হাতিতে বসে।
  • Link to this news (বর্তমান)