• পুজোয় হাওড়ার নিরাপত্তায় বাড়তি তৎপরতা, নজরে নারী নিরাপত্তা
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: কলকাতার মতো দ্বিতীয়া বা তৃতীয়া থেকে রাস্তায় জনস্রোত নামে না। তবে পঞ্চমী থেকে ভিড় শুরু হয় হাওড়া শহরে। এবছরে পুজোয় নিরাপত্তার দিকে বাড়তি নজর দিচ্ছে হাওড়া সিটি পুলিশ। টোটো নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বেপরোয়া বাইকচালকদের দৌরাত্ম্য কমানো, রাস্তায় নারী নিরাপত্তা ও নতুন মেট্রো রুটে ভিড় নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি ব্যবস্থা। এই নিয়ে বৃহস্পতিবার শিবপুর পুলিশ লাইনে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠি। উপস্থিত ছিলেন জয়েন্ট সিপি কে শবরী রাজকুমার, ডিসি ট্রাফিক সুজাতা কুমারী বীণাপাণি ও ডিসি হেড কোয়ার্টার্স শ্যামল মাহাত। এবার হাওড়া শহরে ছোট-বড়, মাঝারি মিলিয়ে মোট ১৪৮৬টি দুর্গাপুজো হচ্ছে। এর মধ্যে ৮০টি এবার নতুন পুজো। ৮১টি বড় পুজো মণ্ডপেই মূলত দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি থাকবে বলে ধারণা করছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, পুজো চলাকালীন শহরের নিরাপত্তায় আড়াই হাজারের বেশি পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকবেন। ৭২৫ জন হোমগার্ডকে স্পেশাল ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ- নিরাপত্তার তদারকি করবেন ৪৬৩ জন উচ্চ পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার। দু’হাজারের বেশি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে লাগাতার নজরদারি চলবে। পুলিশ কমিশনার বলেন, হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ মেট্রো চালু হয়ে যাওয়ায় এবছর এই রুটে ব্যাপক ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেজন্য হাওড়ার দুটি মেট্রো স্টেশনেই বাড়তি ফোর্স থাকবে। এসিপি পদমর্যাদার অফিসার তদারকি করবেন। শহরের রাস্তায় যে কোনও বিপদে পড়লে সাধারণ মানুষের সাহায্যের জন্য থাকবে হাওড়া সিটি পুলিশের ৫৮টি অ্যাসিসটেন্স বুথ। নারী নিরাপত্তায় উইনার্স টিম, পিঙ্ক পেট্রলিং ভ্যানকে কাজে লাগানো হবে। বেপরোয়া বাইক চালানো, মদ্যপদের তাণ্ডব রুখতে রাত এগারোটার পর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে চলবে নাকা চেকিং। পাশাপাশি এই গোটা উৎসব মরশুমে শহরের অপরাধ দমনে স্পেশাল অ্যান্টি ক্রাইম টিম কাজ করবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। 

    সারা বছরই হাওড়া শহরে তীব্র যানজট ও অবৈধ পার্কিং নিয়ে বিস্তর অভিযোগ শোনা যায়। এই দুই সমস্যা পুজোর সময় কয়েকগুণ বাড়ে। ডিসি ট্রাফিক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকেই শহরে পণ্যবাহী যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত শহরে লরি, ট্রাক কিংবা পণ্যবাহী গাড়ি ঢুকতে পারবে না। পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত এই সময়সীমা ভিড় অনুযায়ী গভীর রাত পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। দুপুর বারোটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত কলকাতা পোর্টের গাড়ি ও যাত্রীবাহী ছোট গাড়িগুলিকে ছাড় দেওয়া হবে।

    এবারের পুজোতে টোটো নিয়ন্ত্রণেও কড়াকড়ি করেছে সিটি পুলিশ। আন্দুল রোড, হাওড়া, ময়দান, ব্যাটরা, পাওয়ার হাউজ মোড়ের মতো জায়গায় টোটো চলাচল করতে দেওয়া হবে না। পার্কিংয়ের সমস্যা মেটাতে শহরের বড় বড় পুজো মণ্ডপগুলির আশেপাশে যত ফাঁকা জায়গা রয়েছে, সেখানে পার্কিং জোন তৈরি করা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)