অর্ধেক যাত্রাতেও পুরো ভাড়া! অটো-যন্ত্রণায় কাহিল যাত্রীরা
বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আহিরীটোলা লঞ্চ ঘাট থেকে উল্টোডাঙার অটো ভাড়া ২৫ টাকা। পুজোর আবহে কেউ নিচ্ছেন ৩৫, সুযোগ বুঝে কেউ হাঁকছেন ৪০ টাকা। ‘কেন বেশি ভাড়া?’— জিজ্ঞাসা করলেই সদর্পে চালকরা বলছেন, ‘এই ভাড়াই দিতে হবে। গেলে উঠুন, নাহলে সরে দাঁড়ান।’
ভাড়া জুলুমের মধ্যেই হাতিবাগান থেকে উল্টোডাঙা যাওয়ার জন্য একটি অটো দাঁড় করান এক যাত্রী। জানতে চাইলেন, ‘ভাড়া কত?’ চালক জানালেন, ২৫ টাকা। যাত্রীর পাল্টা বক্তব্য, ‘অর্ধেক রাস্তা যেতেও পুরো ভাড়া গুনতে হবে?’ এই প্রশ্নের জবাবেও চালকদের দাবি, ‘না পোষালে উঠবেন না’।
এই দুই চিত্র শুধু উত্তর কলকাতায় নয়। পুজো এলেই শহরজুড়ে একই চিত্র। মধ্য কলকাতায় শিয়ালদহ, কলেজ স্ট্রিট এলাকাতেও পুরো রুটের জন্য বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। একইসঙ্গে অর্ধেক পথ পেরতেও পুরো ভাড়া নিচ্ছেন অটোচালকরা। যাত্রীদের দাবি, প্রতিবার পুজো এলেই এই দৌরাত্ম্য খাটাতে শুরু করে অটোগুলি। তাও অনেক ক্ষেত্রেই পরিষেবার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তা মিললেও কাটা রুটের ঝামেলা তো লেগেই রয়েছে। সন্ধ্যা হলেই আহিরীটোলা লঞ্চ ঘাট থেকে উল্টোডাঙা পর্যন্ত অটো চলাচল করছে না। রুট দু’ভাগে ভেঙে দিচ্ছেন চালকরা। আহিরীটোলা থেকে হাতিবাগান এবং সেখানে থেকে আবার উল্টোডাঙা যাওয়ার অটো ধরতে হবে। দু’ক্ষেত্রেই ভাড়া ২০ থেকে ২৫ টাকা।
বুধ ও বৃহস্পতিবার রাতে অবৈধভাবে নতুন রুট চালু হয়েছে মধ্য কলকাতায়। কলেজ স্কোয়্যার থেকে সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের (লেবুতলা পার্ক) মধ্যে অটো চালাচ্ছেন কিছু চালক। ভাড়া ৩০ টাকা। মূলত ক্লান্ত দর্শনার্থীদের তুলে নেওয়া। রাতের শহরে দেদার বেআইনি রুটে অটো চলছে, তাও আবার পুলিশের সামনেই। কোনও বাধানিষেধ নেই। এপ্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘এমন কোনও রুট নেই। তবে এভাবে অটো চললে, তা খতিয়ে দেখা হবে।’
দক্ষিণ কলকাতাতেও একই অবস্থা। দুপুর পর্যন্ত রাস্তায় কাটা রুটে ঘুরছে অটো। বেহালা থেকে রাসবিহারী পর্যন্ত অটো রুট রয়েছে। ভাড়া ২৮ টাকা। কিন্তু, গোটা রুটে কোনও অটো নেই। চালকরা বলছেন, রাসবিহারী থেকে তারাতলা পর্যন্ত যেতে হবে। আবার সেখান থেকে অটো বদলে বেহালা যেতে হবে। সবমিলিয়ে খরচ পড়ছে ৪৫ টাকা। যাত্রীদের অভিযোগ, পুজো এলেই এক চিত্র শহরে। এই বিষয় নিয়ে একটি নির্দেশিকার প্রয়োজন রয়েছে। অন্যথায় যথেচ্ছ ভাড়া দাবি করে যাত্রীদের পকেট কাটছে অটো। কলকাতা পুলিশের বক্তব্য, চতুর্থী থেকেই দুপুরের পর থেকে শহরের সব অটো চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।