• ভাড়ার অ্যাকাউন্টে সাইবার প্রতারণার টাকা! মূল পান্ডাকে হেফাজতে নিল গল্ফগ্রিন থানা
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শেয়ারে বিনিয়োগের টোপ দিয়ে দেশজুড়ে সাইবার জালিয়াতির কারবার। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ‘ভাড়া’ নিয়ে সেই কারবারের টাকা ঢোকানো। পাশাপাশি অন্যের নথি ব্যবহার করে বেনামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট চালানো। এহেন জালিয়াত চক্রের মূল পান্ডা পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের বাসিন্দা অগ্নিবেশ মোল্লা দেশ ছেড়ে পালানোর সময় চলতি মাসের ১৬ তারিখ ধরা পড়ে ওড়িশার ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরে। ট্রানজিট রিমান্ডে এই প্রতারককে নিজেদের হেফাজতে পেল গল্ফগ্রিন থানার পুলিশ। কলকাতার দুই থানা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। 

    রিজেন্ট পার্ক এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় সেন বিনিয়োগের টোপ গিলে প্রতারিত হন। ১ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা। অভিযোগের তদন্তে নেমে প্রথমে চারজনকে গ্রেপ্তার করে রিজেন্ট পার্ক থানা। তদন্তে উঠে আসে, গল্ফগ্রিন থানা এলাকার অপর এক বাসিন্দা এই জালিয়াত চক্রের হাতে প্রতারিত হয়েছেন। চক্রের অন্যতম মাথা হল অগ্নিবেশ। তার ডান হাত হিসেবে কাজ করছে মেটিয়াবুরুজের যুবক তৌফিক আলি। বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারে বিনিয়োগের টোপ দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠাচ্ছে। কেউ টোপ গিললেই সংশ্লিষ্টকে একটি গ্রুপ যুক্ত করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা বলছেন, কোন সংস্থা কেমন পারফর্ম করছে, তার ভুয়ো রিপোর্ট তুলে ধরা হতো সেখানে। গ্রুপের সদস্যদের  বিনিয়োগের জন্য নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে  টাকা ডিপোজিট করতে বলা হতো। তারপর সেই টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে কয়েক মিনিটের মধ্যে চলে যেত। 

    তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, এই অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফারের মূল কারিগর অগ্নিবেশ। বিভিন্ন ব্যক্তিকে মোটা টাকা কমিশনের টোপ দিয়ে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সে ভাড়া নিয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তির থেকে নথি সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্টদের নামে অ্যাকাউন্টও খুলেছে। এই অ্যাকাউন্টগুলিতেই জালিয়াতির টাকা জমা পড়ছে। এনসিআরপি পোর্টাল ঘেঁটে তদন্তকারীরা দেখেন, রিজেন্ট পার্ক ও গল্ফগ্রিনে প্রতারিত দুই ব্যক্তির টাকা যে অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে, সেখানেই জমা পড়েছে অন্য রাজ্যের সাইবার প্রতারিতদের অর্থও। এতকিছু জানার পরেও পুলিশ বাগে পাচ্ছিল না অগ্নিবেশ মোল্লাকে। তার নামে লুকআউট নোটিশ জারি করা হয়। দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করে অগ্নিবেশ। কিন্তু, ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরের অভিবাসন দপ্তর পাকড়াও করে তাকে। তার ধরা পড়ার খবর কলকাতা পুলিশের কাছে পৌঁছনোর পর তাকে হেফাজতে নিয়েছে গল্ফগ্রিন থানা। 
  • Link to this news (বর্তমান)