• হাবড়ায় পুজোর থিম নারীশক্তি থেকে শ্রীকৃষ্ণের লীলাখেলা, চলছে প্রস্তুতি
    বর্তমান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: বারাসত মহকুমার মধ্যে হাবড়া বা অশোকনগরে দুর্গাপুজোয় থিমের ছড়াছড়ি। প্রতিবছরই এই এলাকার পুজো দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কিছুটা হলেও দেরিতে কাজ শুরু হয়েছে। তবে প্রতিটি পুজো কমিটি এখন জোরকদমে কাজ চালাচ্ছে। মাঝেমধ্যে বৃষ্টির কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন উদ্যোক্তারা। তবুও মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

    প্রতি বছরই দুর্গাপুজোর প্যান্ডেলে চমক দেয় হাবড়ার আমরা সবাই ক্লাব। এবারও তারা জোর প্রস্তুতি চালাচ্ছে। ৫৫ তম বর্ষে তাদের থিম ‘আমি সেই মেয়ে’। মহিলাদের অবদান তুলে ধরতেই এই ভাবনা উদ্যোক্তাদের। প্যান্ডেলের চারপাশ সাজিয়ে তোলায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নারীশক্তিকে। চন্দ্র অভিযান থেকে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া– কোনও ক্ষেত্রেই আর পিছিয়ে নেই মহিলারা। সেটাই দেখানো হচ্ছে প্যান্ডেলে। ফাইবার, বাঁশ, কাপড় সহ পুরনো দিনের ঐতিহ্যকে কাজে লাগিয়ে তৈরি হচ্ছে প্যান্ডেল। মহিলাদের উপর অত্যাচারের দিকটি সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী বিকাশ পাল। তিনি বলেন, প্রায় একমাস ধরে এই কাজ হচ্ছে। নারীশক্তির দিকটি প্যান্ডেলে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। মানুষ বুঝতে পারবে, নারীরা আজ বঞ্চিত নয়।

    পুজো কমিটির সভাপতি নারায়ণচন্দ্র সাহা বলেন, বৃষ্টির কারণে কাজে একটু সমস্যা হয়েছে। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। আজ, মঙ্গলবার ভার্চুয়ালি মুখ্যমন্ত্রী পুজোর উদ্বোধন করবেন। এই থিম ভাবনার কারণ হল সমাজের ধারক বা বাহক হল নারী। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় নারীরা নির্যাতিত বা লাঞ্ছিত হচ্ছেন। সেই নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বা হুঁশ ফেরাতেই এই ভাবনা। আশা করি প্রত্যেকের ভালো লাগবে। আমাদের পুজোর বাজেট ১৫ লক্ষ টাকা।

    অন্যদিকে, ৬৬ তম বর্ষে হাবড়ার কামারথুবা প্রগতি সঙ্ঘের থিম ভাবনা ‘বাঁশির সুরে বাসুলি’। মূলত শ্রীকৃষ্ণের জীবনী ও লীলাকাহিনীকে মণ্ডপের চারপাশে তুলে আনার ভাবনা নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। ক্রমশ বাড়ছে হানাহানি, শত্রুতা। তাতে ইতি টেনে বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্ক গড়ে তোলার বার্তা নিয়েই এই থিম ভাবনা। বাঁশ, প্লাই, সহ বিভিন্ন জিনিসকে কাজে লাগিয়েছেন উদ্যোক্তারা। 

    তবে, এই পুজোর অন্যতম বিশেষত্ব হল, স্থানীয় শিল্পীদের কাজে লাগিয়েই তৈরি হয় মণ্ডপ। পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা মনোজ রায় বলেন, নামীদামি শিল্পীরা মোটা টাকার বিনিময়ে বড় বড় প্যান্ডেল তৈরি করেন। সেখানে প্রতিযোগিতায় ছোটশিল্পীরা অনেকটাই পিছিয়ে পড়েন। তাই তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে বা কাজের জায়গা দেওয়ার ভাবনা নিয়েই প্রতিবছরই আমরা স্থানীয় শিল্পীদের কাজে লাগাই। এবারও তাই হল। মণ্ডপে থাকবে বাঁশি, মানুষের মুখের ছবিও। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের প্যান্ডেলের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেছেন। আমরা আশাবাদী যে, এই প্যান্ডেল মানুষের নজর কাড়বে।
  • Link to this news (বর্তমান)