পুজোর মুখে অভিষেক-সাক্ষাৎ, এই নির্বাচনেই তৃণমূলের পতাকায় শোভন? যা জানালেন আজকাল ডট ইন-কে...
আজকাল | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রিয়া পাত্র
মমতা ঘনিষ্ঠ। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। একসময়ে তাঁর ব্যাক্তিগত জীবনের টানাপোড়েন এসেছিল রাজনীতির আঙিনায়। দল ছেড়েছিলেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলে গিয়েছিলেন। সেখানে দমবন্ধ লাগায় সেখান থেকেও ফিরে এসেছেন। এবার কি তাহলে ফের তৃণমূলেই? ভোটের আগে শোভন চ্যাটার্জির অভিষেক-সাক্ষাতে রাজনীতিতে জোর চর্চা।
বৃহস্পতিবার। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চ্যাটার্জি দেখা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জির সঙ্গে। কথা বলেন তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। এই সাক্ষাৎ কি কেবল পুজোর মুখে সৌজন্য সাক্ষাৎ? নাকি এটাই আদতে শোভনের তৃণমূলে ফিরে আসার প্রথম ধাপ। জল্পনা বাড়তেই আজকাল ডট ইন যোগাযোগ করেছিল কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের সঙ্গে। কী জানালেন শোভন?
জানালেন, এই সাক্ষাতকে যেভাবে 'হঠাৎ' বলা হচ্ছে, তেমনটা নয় মোটেই। কারণ হিসেবে শোভন নিজের সঙ্গে মমতা-অভিষেকের পরিবারের দীর্ঘ যোগাযোগের কথাই বলছেন। তাঁর বক্তব্য, 'এই সাক্ষাৎ একেবারেই হঠাৎ নয়। অভিষেকের পরিবারের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের যোগাযোগ। আমি নিজেকেও ওই পরিবারের অংশ মনে করি। মমতাদিই তো আমাকে আমার সামগ্রিক অবস্থান, পরিচিতি সব দিয়েছে। আমি মমতাদির পরিবার এবং তৃণমূল কংগ্রেসের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ।'
কী কথা হল দু' জনের?শোভন জানাচ্ছেন, 'কথা হল তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। মমতাদি দলের সর্বময় কর্ত্রী। আর অভিষেক এখন দলের সাংগঠনিক দিক দেখাশোনা করছে। ওর সঙ্গে পুজোর মুখে দেখা করলাম। নানা বিষয়ে কথা হল। মতের আদান-প্রদান হল বলা যেতে পারে।'
পুজোর আগে সাক্ষাৎ, তবে এই সাক্ষাৎ কি আদতে শোভনের দলে ফেরার আভাস? তৃণমূলের পতাকায় ফের প্রাক্তন মেয়র? ভোটেও কি তবে...
শোভন বলছেন, ভোটে দেখা যাবে কী যাবে না, সে আলাদা কথা। তবে তিনি ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন, দলের যে কোনও কাজে, পরিবারের অংশ হিসেবে যুক্ত হতে। তিনি বলছেন, 'আমি তো আগ্রহ প্রকাশ করেছি অবশ্যই। পুজোর আগের সাক্ষাৎ হলেও, রাজনীতি নিয়ে তো কথা হয়েছেই। যদি নির্দেশ আসে, তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও কাজে যুক্ত হওয়ার, আমি তাতে রাজি। আমি নিজেই আগ্রহ প্রকাশ করেছি।'
শুধু সাক্ষাৎ নয়, প্রায় চার দশকের বেশি সময় ধরে, বলা যায় একেবারে গোড়ায় দিন থেকে তৃণমূলের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা শোভন অভিষেকের রাজনীতিতে অভিষেকের সাক্ষী, দেখেছেন তাঁর পরিণতভাব, রাজনৈতিক বিকাশ এবং বিপুল দায়িত্ব সামলানো। বলছেন, তিনি অভিষেককে দেখে বুঝতে পারেন, কেবল বড়দের থেকেই শিক্ষা নেওয়া যায় এমনটা নয়। অনেকসময় শেখা যায় ছোটদের থেকেও।
অভিষেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হল, বিজয়া কিংবা কালীপুজোয় তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমোর সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা?শোভন জানাচ্ছেন, 'এখনও সেরকম কিছু ঠিক হয়নি। তবে দিদির সময় হলে, সাক্ষাৎ হবে অবশ্যই।'
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে, মতবিরোধ, মনকষাকষি থেকে দল ছেড়েছিলেন শোভন। ২০১৯ সালে ১৪ আগস্ট বিজেপিতে যোগদান করেন। তবে গেরুয়া শিবিরে খুব বেশিদিন ছিলেন না। নানা কারণে, প্রায় দু' বছরের মাথায়, ২০২১ সালে পদ্মশিবির থেকে সরে যান তিনি। মাঝে নানা মত নিয়ে বিতর্ক, পরেও নজর থেকেছে তাঁর গতিবিধির দিকে। এখন কি ফের তৃণমূলে ঘর ওয়াপসি অপেক্ষার? সেই প্রশ্নই ঘুরছে বাংলার রাজনীতিতে।