• পুজোর মুখে আবার রাজপথে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • পুজোর মুখে এখনও মিছিলমুখী এসএসসির চাকরিপ্রার্থীরা। শূন্যপদ বাড়ানো সহ একাধিক দাবিতে বিক্ষোভে নামেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবনের উদ্দেশে মিছিল শুরু করতেই পুলিশের তরফে বাধা দেওয়া হয় তাঁদের। শুরু হয় পুলিশ ও চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি। ক্রমশ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

    গত ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর এসএসসির শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। দুই দফায় পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার পর থেকেই রাজপথে একাধিক দাবিতে বারবার বিক্ষোভে নামছেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রায় ৮ বছর পরে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি শূন্যপদ বাড়িয়ে তা ১ লক্ষ করা হোক। দীর্ঘ ১৪ বছরে কোনও নিয়োগ হয়নি। তাই এবার শূন্যপদ বাড়িয়ে নিয়োগ বাড়াতে হবে। দ্বিতীয়ত, যোগ্য চাকরিহারা প্রার্থীদের যে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়া হচ্ছে তারও বিরোধিতা করেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, ২০১৬ সালের চাকরিহারা শিক্ষকদের আলাদাভাবে চাকরি দেওয়া হোক। এই অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়া হলে তা নতুন চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চিত করা হবে বলে দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। এই দাবিগুলি নিয়ে চতুর্থীর দিনে বিকাশ ভবনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন বিক্ষোভকারী চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু করুণাময়ী থেকে যাত্রা শুরু করতেই পুলিশ তাঁদের পথ আটকায়। মিছিল আটকানোর জন্য ও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয় করুণাময়ী চত্বরে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে চাকরিপ্রার্থীদের। বিকাশ ভবন যেতে তাঁদের বাধা দিলে চাকরিপ্রার্থীদের তরফে বলা হয়, তাঁদের শন্তিপূর্ণ ভাবে যেতে দেওয়া হোক। কিন্তু তা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁদের পথ ছাড়েনি। পুলিশ ও চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে সংষর্ষের ফলে রীতিমতো করুণাময়ী চত্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে চাকরিপ্রার্থীদের একটাই দাবি তাঁরা আধিকারিকদের সঙ্গে কথা না বলে যাবেন না। এদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গেও কথা বলতে চান বলে দাবি করেন চাকরিপ্রার্থীরা।

    প্রসঙ্গত, দুর্নীতি যুক্ত ছিল ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেলটি বাতিল করে দেওয়া হয়। ফলে চাকরি হারায় প্রায় ২৬ হাজার জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। পুনরায় এসএসসি পরীক্ষার আয়োজন করার নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষার ফল প্রকাশের নির্দেশও দেওয়া হয়। চাকরি হারানোর পর চিন্তায় ভেঙে পড়েন হাজার হাজার শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীরা। পথে নেমে আন্দোলন করেন তাঁরা। পুনরায় পরীক্ষা না দেওয়ার দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও যায় চাকরিহারা প্রার্থীরা। যদিও তাতে কোনও লাভ হয়না। আদালতের নির্দেশে এসএসসির তরফে দুর্নীতিময় প্যানেল থেকে অযোগ্যদের বাছাই করে কমিশন। আয়োজিত পরীক্ষায় যাতে কোনও অযোগ্য প্রার্থী অংশ নিতে না পারে সেদিকে কড়া নজর দিতে বলা হয়েছিল কমিশনকে। সেইমতোই স্বচ্ছভাবে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় গত ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর কমিশন নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেয়। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন মোট ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার জন চাকরিপ্রার্থী। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে কমিশনের তরফে এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়া হবে তার বিরোধিতা করেন নতুন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের বক্তব্য যদি এমন করা হয় তবে তাঁদের মধ্যে কেউ ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় ডাক পাবেন না। তাঁরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। এই দাবিতেই পথে নামেন চাকরিপ্রার্থীরা। এর পাশাপাশি শূন্যপদ বাড়ানোর দাবিতেও একাধিকবার বিক্ষোভ করেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার এই একই দাবি নিয়ে বিকাশ ভবনের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)