নতুন ইউনিট হবে। সে জন্য কলোনি ভেঙে এলাকা ফাঁকা করা হয়েছে। প্রতি বছর কলোনিতে চারটি দুর্গাপুজো হত। পুজোর চার দিন গম গম করত কলোনি। এ বার ডিটিপিএস কলোনি জুড়ে শুধুই নিস্তব্ধতা।
ডিভিসির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ডিটিপিএসের নিজস্ব কলোনিতে থার্ড ইউনিট, ওল্ড কলোনি, নিউ কলোনি ও শিব-কালী মন্দির, মোট চারটি পুজোর আয়োজন করা হত। স্থায়ী বেদী, মাথায় স্থায়ী ধাতব কাঠামোর ব্যবস্থা ছিল। কলোনি ছাড়াও ডিটিপিএসের বহু কর্মী বসবাস করেন সংলগ্ন এলাকাগুলিতে। তাঁরাও পাড়ার পুজো ছেড়ে মেতে উঠতেন কলোনির পুজোতেই। দীর্ঘ দিনের সেই রীতি এ বার ভেঙে গিয়েছে।
প্রায় আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ৮০০ মেগাওয়াটের একটি সুপারক্রিটিক্যাল ইউনিট স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রয়োজনীয় জমির জন্য কর্তৃপক্ষ ডিটিপিএস কলোনির কোয়ার্টার্সগুলি ভেঙে দিয়েছেন। থার্ড ইউনিটের পুজো যেখানে হত, দেখা গেল, বেদী ও মাথার ধাতব কাঠামো সব ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেখানে এখন ফাঁকা মাঠ। শুধু নলকূপটি রয়েছে। এই পুজো চলে গিয়েছে অর্জুনপুরে। সেখানে বছর তিনেক হল একটি সর্বজনীন পুজো চালু হয়েছে। সেই পুজোর সঙ্গেই মিশে গিয়েছে থার্ড ইউনিটের পুজো। পুরষা গ্রামের পাশে যে মাঠে আগে কালীপুজো হত, সেখানে উঠে গিয়েছে ওল্ড কলোনির পুজো। নিউ কলোনির পুজো হচ্ছে মায়াবাজারের কাছে। এলাবাসীর আর্জিতে এখনও টিকে আছে শিব-কালী মন্দিরটি। তাই শিব-কালী মন্দিরে কোনও রকমে দুর্গাপুজোর আয়োজন হচ্ছে। মন্দির পরিচালন কমিটির তরফে অচিন্ত্য কুমার দাস বলেন, “এ বারই সম্ভবত শেষ পুজো হচ্ছে মন্দিরে। এই মন্দিরও সরিয়ে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন ডিটিপিএস কর্তৃপক্ষ।”
কলোনির চারটি পুজোই সরকারি অনুদান পেয়ে থাকে। তবে এই অনুদান অন্য খাতে খরচ করার নিয়ম নেই। উদ্যোক্তাদের অনেকের দাবি, এ বার যা পরিস্থিতি, তাতে পুজো আয়োজনে কাজে লাগবে এই অনুদান। তাঁদের বক্তব্য, “ওই টাকার অধিকাংশ লেগে যাবে পুজো আয়োজনে।” অঙ্গদপুরের বাসিন্দা অশোক দত্ত জানান, অঙ্গদপুর, অর্জুনপুর, পুরষা, মায়াবাজার-সহ নানা এলাকা থেকে অনেকে কলোনিতে যেতেন পুজো দেখতে। এ বছর থেকে আর তা হবে না। ডিটিপিএসের এক কর্মী বলেন, “কলোনির পুজোর নিজস্বতা আর বজায় থাকবে না। যাই হোক, পুজো উঠে গেল না এই ঢের!”