তিনি কৃত্রিম ফুলের মালা গেঁথে নিজের সংসার সাজান। অন্য মহিলাদেরও সংসার ভরিয়ে তুলতে পথ দেখান। ১৮ বছর ধরে স্বামীর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ব্যবসা করছেন গুসকরার আলুটিয়ার শিখা গড়াই। কারিগরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে কাঁচামাল পৌঁছনো, মালা তৈরি, সংগ্রহ, সবটাই একা হাতে সামলান তিনি। আর কলকাতা থেকে কাঁচামাল আনা, বাজার সামলান তাঁর স্বামী রাহুল। জনা পনেরো মহিলাকে স্বনির্ভরতার পথ দেখাচ্ছেন তাঁরাই।
শিখা জানান, শাশুড়ির কাছে তাঁর কাজ শেখা। তিনি অন্যের কারখানায় কাজ করতেন। শিখাও আগে অন্যের থেকে জিনিস এনে মালা বানাতেন। পরে নিজেরাই কাজ শুরু করেন। তাঁদের কারখানায় ২০ টাকা থেকে দু’হাজার টাকা দামেরও মালা তৈরি হয়।গুসকরা, দুর্গাপুর, বোলপুর, ইলামবাজারের মতো একাধিক পাইকারি বাজারে মালা সরবরাহ করেন তাঁরা। শিখা বলেন, ‘‘ঘরের বউ থেকে মেয়ে, সবাই কাজ করে। পুজোর মরসুমে কয়েক লক্ষ টাকার ব্যবসা হয়।কাপড়, পুঁতি, থার্মোকল দিয়ে গোলাপ, পদ্ম, জবার মালা গাঁথি আমরা। ঘর সাজানোর জিনিসও তৈরি হয়।’’ শিখার সঙ্গে যাঁরা কাজ করেন ডজন অনুযায়ী পারিশ্রমিক পান তাঁরা। তবে কাজ করার বড় জায়গা বা মালা রাখার ব্যবস্থা তেমন নেই। সরকারি কোনও সাহায্যও পাননি, জানান শিখা। ওই কারখানার কারিগরেরা জানান, বিশ্বকর্মা পুজো থেকে কালী পুজো পর্যন্ত কৃত্রিম মালার চাহিদা থাকে। ফলে রথের পর থেকেই কাজ পুরোদমে চলে।
প্রিয়া কর্মকার, সঞ্জু রায়, সুমিতা রায়দের স্বামীরা রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে বা দিনমজুর। তাঁরা বলেন, ‘‘এই উপার্জন দিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, অসুস্থতা, নিজেদের হাতখরচ চলে সারা বছর।’’ প্রতি মাসে তিন হাজার বা তার বেশি টাকা রোজগার করেন তাঁরা। খাদি গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের জেলা আধিকারিক মানস গোস্বামী বলেন, “ওই কারিগরেরা ক্লাস্টার করে প্রস্তাব পাঠালে সরকারি সুযোগ সুবিধা মিলতে পারে।’’