রাজ্যে আগামী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি মাথায় রেখে বাংলায় নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের দায়িত্ব দিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবকে এ বার বঙ্গে বিজেপির নির্বাচনী পর্যবেক্ষক করা হয়েছে। ভূপেন্দ্র বিজেপির অন্দরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আস্থাভাজন হিসেবেই পরিচিত। ঘটনাচক্রে, কলকাতায় আজ, শুক্রবারই পুজোর উদ্বোধনে থাকার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের। বিজেপির অন্দরের ব্যাখ্যা, ভূপেন্দ্রকে বাংলায় নির্বাচনী পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে শাহের নজরদারিতেই সাংগঠনিক স্তরে ভোট-লড়াইয়ের ব্যবস্থা করে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডা।
বাংলায় সহকারী নির্বাচনী পর্যবেক্ষক করা হয়েছে ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব দেবকে। এর আগে হরিয়ানা, উড়িষ্যা এবং তার পরে দিল্লিতে দায়িত্ব পেয়েছিলেন বিপ্লব। বিজেপির একাংশের মত, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং নির্বাচনী অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই বিপ্লবকে এ বার বাংলায় ভূপেন্দ্রের সঙ্গে সহকারী দায়িত্বে নিয়ে আসা হচ্ছে। যদিও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলার লোকজনের (তৃণমূলের যে নেতারা ত্রিপুরায় পুরভোট করতে গিয়েছিলেন) উপরে আক্রমণের জন্য বিজেপি বিপ্লবকে ‘পুরস্কার’ দিয়েছে! বাংলার মানুষ ভোটের পথেই এর জবাব দেবেন বলে তৃণমূলের দাবি। প্রসঙ্গত, বঙ্গ বিজেপিতে সাংগঠনিক ভাবে যাঁরা পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা অপরিবর্তিত থাকছেন।
বাংলার পাশাপাশি ভোট-মুখী আরও দুই রাজ্য বিহার ও তামিলনাড়ুতে নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের নামও ঘোষণা করেছে বিজেপি। বিহারে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক করা হয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে। সাংগঠনিক ভাবে তিনি আগেই বিহারে বিজেপির কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দুই সহ-পর্যবেক্ষক করা হয়েছে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সি আর পাটিল এবং উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যকে। তামিলনাড়ুতে বিজেপির নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি বৈজয়ন্ত পান্ডা। তাঁর সঙ্গে সহ-পর্যবেক্ষক করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল প্রতিমন্ত্রী মুরলীধর মোহলকে।
এরই মধ্যে আজ শহরে মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতিতে রাজ্য বিজেপির নেতাদের মুখোমুখি হতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সকালে প্রথমে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে পুজো উদ্বোধন, তার পরে কালীঘাট মন্দির দর্শন সেরে বিধাননগরে পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে রাজ্য বিজেপির বিজেপির সাংস্কৃতিক শাখার তত্ত্বাবধানে আয়োজিত পুজোর সূচনায় যাওয়ার কথা শাহের। সব ঠিক থাকলে পুজো উদ্বোধনের পরে তিনি রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠকে বসতে পারেন। কলকাতা থেকে তাঁর যাওয়ার কথা বিহারে। তবে কালীঘাট এলাকায় একটি পুজো উদ্বোধনের যে প্রাথমিক কর্মসূচি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছিল, নিরাপত্তাজনিত কিছু প্রশ্নের কারণে সেই সূচি বাতিল করা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর।