তিনটি পর্যায়ে গত ২১-২৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের ৪৬টি দুর্গাপুজোর ‘ভার্চুয়াল’ উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে সে তালিকায় নন্দীগ্রামের পুজো নেই। এ বছর ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০টি দুর্গাপুজো হচ্ছে নন্দীগ্রাম বিধানসভায়। গত বছর এখানকার একটি পুজোর উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন। কিন্তু এ বার নন্দীগ্রাম তালিকায় না থাকায় তৃণমূল প্রভাবিত বেশ কিছু পুজো কমিটির কর্তারা হতাশ। আর বিজেপি নেতৃত্বের টিপ্পনী, “গত বারের হারের যন্ত্রণায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রাম থেকে মুখ ফিরিয়েছেন।” যদিও সে কথা মানতে চাননি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
গত বছর খোদামবাড়ি ইউনিয়ন সর্বজনীন দুর্গোৎসবের উদ্বোধন ‘ভার্চুয়াল’ মাধ্যমে করেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার ৭০তম বর্ষে পুজোর উদ্বোধনও যাতে তাঁর হাতে হয়, সে জন্য জেলা তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু ২১ সেপ্টেম্বর প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধনের সময় এই পুজোর মণ্ডপ তৈরি হয়নি। পরে, আর সুযোগ মেলেনি। খোদামবাড়ি পুজো কমিটির সম্পাদক স্বপন পাত্র বলেন, “আমরা সরকারি অনুদান পেয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পুজোর সূচনা হলে, উৎসব আলাদা মাত্রা পেত। আফসোস হচ্ছে।” নন্দীগ্রামের আশদতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ দে-ও বলেন, “সরকারি অনুদান নিয়েছি। মণ্ডপের সামনে সরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করলে ভাল হত।”
তবে এ দিনই পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, “নন্দীগ্রামে দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করতে কেউ মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকে না। ওখানে আমি হিন্দু জাগরণ ঘটিয়েছি। ২০২৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যাঁকে পদ্মফুল দিয়ে পাঠাবেন, তাঁকে ২০ হাজার ভোটে জেতাব।” আর বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পালের কটাক্ষ, “গত বিধানসভা ভোটে হারের যন্ত্রণাই মুখ্যমন্ত্রীকে নন্দীগ্রাম-বিমুখ করে রেখেছে।”
তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজিত রায় অবশ্য বলেন, “এ সব ভিত্তিহীন কথা। সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে ক্লাব-কর্তাদের ভুল বোঝাবুঝির ফলে নন্দীগ্রামের কোনও পুজো এ বার মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেননি।” তাঁর সংযোজন, “২০২৬-এ শুভেন্দুকে প্রাক্তন করবে নন্দীগ্রাম।”
মহকুমাশাসক (হলদিয়া) সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল পুজো উদ্বোধন সংক্রান্ত বিষয় দেখে জেলা তথ্য-সংস্কৃতি দফতর।” জেলা তথ্য-সংস্কৃতি আধিকারিক মহুয়া মল্লিককে ফোন করা হলে তিনি বলেন, “মিটিংয়ে ব্যস্ত।” পরে ফোন ধরেননি। মোবাইল-বার্তার জবাবও মেলেনি।