• পরিযায়ীদের হাত ধরেই জাঁক সোনা তালুকের দুর্গাপুজোয়
    আনন্দবাজার | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • দুর্গাপুজোয় থিমের রমরমা দাসপুরে। আর সোনা তালুকের এই পুজোয় অবদান মূলত পরিযায়ী স্বর্ণশিল্পীদের। সেই পরিযায়ীরা ছড়িয়ে রয়েছেন উত্তর ও দক্ষিণ ভারত থেকে শুরু করে বিদেশে। দেশের নানা প্রান্তে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা কিংবা নেপালের অশান্ত পরিবেশেও গ্রামের পুজোয় সেখানকার পরিযায়ীদের আর্থিক সাহায্য বন্ধ হয়নি।

    পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে বড় বাজেট এবং থিমের পুজো দেখতে জেলার নানা এলাকার মানুষ ভিড় করেন। দাসপুর মানেই নজরকাড়া মণ্ডপ। থিম নিয়ে চলে প্রতিযোগিতাও। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। আর সেই জাঁকের পিছনে থাকে পরিযায়ীদের অবদান। স্বর্ণ ব্যবসায়ী, কারিগর থেকে ভিন্‌ রাজ্যে কর্মরত বিভিন্ন ক্ষেত্রের পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে অর্থ সাহায্য পান উদ্যোক্তারা। দাসপুর, সোনাখালির বেশিরভাগ বড় বড় পুজো সেই ভরসাতেই হয়।

    সোনাখালি স্কুলপাড়া সবর্জনীন পুজো কমিটির এ বারের থিম ‘করি যন্ত্রের বন্দনা, তবু যন্ত্রতেই যন্ত্রণা।’ যন্ত্রে আসক্তি থেকে সরিয়ে তার সঠিক ব্যবহারের বার্তা দিচ্ছেন উদ্যোক্তারা। যন্ত্র আর প্রযুক্তির বাড়বাড়ন্তে কর্মহীনতার আশঙ্কা কাটিয়ে এগিয়ে চলার বার্তাও ফুটে উঠেছে মণ্ডপে।মহালয়ার দিন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ভার্চুয়াল উদ্বোধন হয়েছে। পুজো কমিটির পক্ষে পবিত্র মণ্ডল, শঙ্কর চক্রবর্তীরা বললেন, “দেশের নানা রাজ্যে এবং নেপালে কর্মরত বহু যুবক এই পুজোর সাথে যুক্ত। তাঁরা সবাই এগিয়ে আসেন। এ বারও ব্যতিক্রম হয়নি।”

    পাঁচবেড়িয়া সানরাইজ় পুজো কমিটির এ বারের থিম বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা।পুরনো প্রাসাদের আদলে মণ্ডপ সাজানো হয়েছে শাঁখা, পলা, মাটির কলকে, টেরাকোটার নানা মূর্তি দিয়ে। পুজো কমিটির পক্ষে নির্মল পালধী বলেন, “বছর কুড়ি আগে এখানে থিম পুজো শুরু হয়। গোড়া থেকেই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ও স্থানীয় অনেক স্বর্ণশিল্পী-সহ বিভিন্ন পেশার লোকজন পুজোয় অর্থ সাহায্য করে আসছেন। নেপালে কর্মরত দুই ভাই তুফানকান্তি বেরা ও তমালকান্তি বেরা এ বছর অষ্টমী পুজোর পুরো খরচ বহন করবেন।”

    লঙ্কাগড় (নাড়াজোল) সবর্জনীনের থিম নবদুর্গা প্রতিমা।সঙ্গে মানানসই মণ্ডপ হচ্ছে বলে পুজো কমিটির পক্ষে সত্যব্রত দোলই জানিয়েছেন। রাধাকান্তপুর, গৌরা, কামালপুর, বেলিয়াঘাটা, গোপালপুর সবর্জনীন-সহ দাসপুরে সব মিলিয়ে দুশোর কাছাকাছি দুর্গাপুজো হচ্ছে। কলাইকুন্ডি চতুর্মুখ সবর্জনীন পুজোর থিম ভূস্বর্গ কাশ্মীরে সম্প্রীতির বার্তা এবং চাঁইপাট সবর্জনীন পুজোর ভাবনা ওড়িশার মানত মন্দির। দুই পুজো কমিটির পক্ষে যথাক্রমে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী এবং সন্টুলাল ভৌমিক মানলেন, “এলাকার স্বর্ণশিল্পীরা আমাদের বড় ভরসা। সবাই নিজেদের মতো করে এগিয়ে আসেন। এ বার নানা সমস্যার আবহেও পুজোয় তাঁরা শামিল হয়েছেন।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)