গল্প-উপন্যাসের পাঠক দিন দিন কমে যাচ্ছে। বরং মোবাইল ফোনে আসক্তি বাড়ছে। বাংলা ভাষার চর্চার পরিসরও সঙ্কুচিত হচ্ছে। নতুন প্রজন্মের বই ও মাতৃভাষার প্রতি এই অনীহা ঘিরে উদ্বিগ্ন বিভিন্ন মহল। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে নিজেদের শিকড় রক্ষার বার্তা দিতে উদ্যোগী হয়েছে পুরুলিয়ার কিছু পুজো উদ্যোক্তা।
সবাইকে বইমুখী করতে পুরুলিয়ার মধ্যবাজার ষোলোআনা কমিটি পুজোর থিম করেছে ‘গ্রন্থাগার’। পুজো মণ্ডপ সেজে উঠছে গ্রন্থাগারের আদলে। শহরের প্রাচীন এই পুজো এ বার ১৩২ বছর পূর্ণ করছে। পুজো কমিটির সম্পাদক মাধব নন্দী বলেন, ‘‘বর্তমান প্রজন্ম বই থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বিষয়টি খুবই চিন্তার। তাই আমরা এ বার পুজোয় তরুণ প্রজন্মকে বইমুখী করার বার্তা দিতে চাইছি।’’
মণ্ডপে বাংলা সাহিত্যের জ্যোতিষ্ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখের ছবি ও তাঁদের উল্লেখযোগ্য রচনার ছবি রাখা থাকবে। নানা লেখকের বইয়ের ছবিতে মণ্ডপে যেন গ্রন্থাগার উঠে আসছে।
পুরুলিয়া শহরের নর্থ লেক রোড সর্বজনীনের থিম ‘আ মরি বাংলা ভাষা’। পুজো কমিটির সদস্য জগন্নাথ সেন বলেন, ‘‘বাঙালির নিজের প্রাণের ভাষা বাংলা। সেই ভাষা ভুলতে বসেছেন অনেকে। বাবা-মাকে ড্যাড-মম বলতে শেখানো হচ্ছে। তাই আমরা এ বার পুজোয় বাংলা ভাষার উপরে গুরুত্ব দিয়েছি। বর্ণপরিচয় তুলে ধরা হবে মণ্ডপে। বোঝানো হবে বাংলা ভাষার গুরুত্ব। থাকবে বাংলার মনীষীদের বাণী। নতুন প্রজন্মকে বাংলা ভাষার গুরুত্ব বোঝাতে চাই আমরা।’’
পুরুলিয়া জেলা গ্রন্থাগারের ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক মৃণালকান্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রন্থাগারের গুরুত্ব আছে, থাকবেও। সেখানে বইয়ের সঙ্গে পরিচয়ের সুযোগ পাওয়া যায়। বই পড়া দরকার। পুজো কমিটির এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’’