• অধ্যাপক ও শিক্ষক সংগঠনের সমস্ত কমিটি ভেঙে দিল তৃণমূল, কেন এমন পদক্ষেপ? নানা জল্পনা শাসকদলে
    আনন্দবাজার | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • দলের অধ্যাপক, প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষকদের সংগঠনের রাজ্য কমিটি ও সমস্ত জেলা কমিটি ভেঙে দিল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাসকদলের পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, আপাতত ওয়েবকুপা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের কমিটি ভেঙে দেওয়া হল। শারোদৎসব শেষ হওয়ার পরে নতুন করে সমস্ত কমিটি ঘোষণা করা হবে।

    কয়েক সপ্তাহ আগেই ওয়েবকুপার সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণকলি বসু প্রয়াত হয়েছেন। ফলে অধ্যাপক সংগঠনে নতুন সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা অনিবার্য ছিল। কিন্তু দেখা গেল সমস্ত স্তরের কমিটিই ভেঙে দিল দল। অধ্যাপক সংগঠনের পাশাপাশি দুই স্তরের শিক্ষক সংগঠনের ক্ষেত্রেও একই সাংগঠনিক পদক্ষেপ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

    তৃণমূলে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিভিন্ন জেলার ব্লক স্তরে পার্টি এবং গণসংগঠনে ধাপে ধাপে রদবদল করছে তৃণমূল। যে যে এলাকায় দলে গোষ্ঠীকোন্দল রয়েছে, সেখানে এক জনকে সভাপতি করার বদলে কোর কমিটি তৈরি করছে তৃণমূল। কিন্তু অধ্যাপক ও শিক্ষক সংগঠনের ক্ষেত্রে ভিন্ন পথে হাঁটল শাসকদল। কেন সমস্ত কমিটি ভেঙে দেওয়া হল? আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূল কোনও কারণ ব্যাখ্যা করেনি। তবে দলের অনেকেই নানাবিধ কারণের কথা বলছেন।

    একাংশের বক্তব্য, এত দিন পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে ব্রাত্য বসু দলের ‘শিক্ষা সেল’ দেখতেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে মমতা এবং অভিষেক ওই সংগঠনগুলির নিয়ন্ত্রণ নিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। যার অর্থ, ছাত্র, যুব, শ্রমিক সংগঠনের মতো শিক্ষা সেলকেও দলের সর্বোচ্চ স্তর থেকেই দেখভাল করা হবে। যাকে অনেকে ব্রাত্যের সাংগঠনিক ক্ষমতা ‘খর্ব’ করা হিসাবেও দেখতে চাইছেন। যদিও তা একেবারেই সেই অংশের ধারণা। এর কোনও আনুষ্ঠানিক সিলমোহর নেই।

    অন্য একটি অংশের বক্তব্য আবার ভিন্ন। তাঁদের ব্যাখ্যা, নানা কারণে ওয়েবকুপার মধ্যে কোন্দল ছিল। কমিটিতে রদবদলের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে অনেকদিন আগেই। আবার পাশাপাশি আদালতের রায়ের পরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। নতুন নিয়োগ হলে তাঁদের থেকেও সংগঠনে প্রতিনিধি রাখতে হবে। সেই প্রক্রিয়া হয়ে যাওয়ার পরে এক সঙ্গে অধ্যাপক ও শিক্ষক সংগঠনের কমিটি গঠন করবে তৃণমূল।

    তৃতীয় ব্যাখ্যায় অনেকে বৃহস্পতিবার অভিষেকের সঙ্গে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের কথা বলছেন। বৈশাখী অতীতে ওয়েবকুপার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই সুবাদেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। ঘটনাচক্রে, অভিষেকের সঙ্গে বৈশাখীদের বৈঠক হয়ে যাওয়ার পরেই তৃণমূলের তরফে ওই ঘোষণা করা হয়েছে। যার ফলে এই জল্পনা আরও জল-বাতাস পেয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)