• খালে দূষণের কথা স্বীকার করলেও উচ্ছেদে সায় নেই মানসের
    আনন্দবাজার | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • বেআইনি জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ নয়, বরং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে খালের পরিকাঠামো উন্নত করতে চায় সেচ দফতর। সোমবার গভীর রাতের বিপুল বৃষ্টির পরে জলের তলায় চলে যাওয়া শহরকে দেখে প্রশ্ন উঠছে, শহরের নিকাশির প্রধান মাধ্যম খালগুলির জলধারণের ক্ষমতা নিয়ে।

    সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বুধবার সল্টলেকের জলসম্পদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, এমন বৃষ্টির কোনও পূর্বাভাস দেয়নি কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর। এই পরিস্থিতি থেকে সেচ দফতর অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করবে। পাশাপাশি ২০২১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ২৩১ কিলোমিটার খালের সংস্কার করার দাবিও করেন সেচমন্ত্রী। কিন্তু খালপাড়ের অবৈধ দখলদারির সমস্যা নিরসনে কড়া পদক্ষেপ যে করা হবে না, তা-ও তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কারও ঘর ভেঙে দেওয়া অমানবিক। এটা আর্থ-সামাজিক সমস্যা। যা করা হবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে। মানুষকে সচেতন করতে হবে।’’

    সম্প্রতি আনন্দপুরের কাছে টিপি খালে এক তরুণ ও তরুণী খালের জলে পড়ে পাঁকে গেঁথে মারা যান। খালের ওই অংশটি শুধুমাত্র জবরদখল হঠাতে না পারার কারণে সংস্কার হয়নি বহু বছর। সেচ দফতর সূত্রেরই খবর, উত্তর কলকাতার একটি খালেরপাড়ে এমনই অবস্থা যে সেখানে কয়েক মাস ধরে জেসিবি কাজ না করেই বসে রয়েছে।

    মঙ্গলবার দিনভর শহর জলবন্দি হওয়ার কারণ হিসেবে সেচমন্ত্রী এ দিন সামনে রেখেছেন দীর্ঘ সময় ধরে গঙ্গায় জোয়ার চলায় কলকাতা পুরসভার লকগেট বন্ধ রাখার বিষয়টিকে। তাঁর দাবি, ‘‘পুরসভা লকগেট খুললে কলকাতা শহর কুড়ি মিটার জলের নীচে চলে যেত। জোয়ার নামার পরে সারা রাত জেগে সেচ দফতরের আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারেরা কাজ করেছেন। তাতে বুধবার শহরের সিংহভাগ রাস্তা থেকে জল নেমে গিয়েছে।’’ এই ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলায় বাগজোলা খালের কুলটি পাম্প হাউসের ২৪০০ কিউসেক ক্ষমতা বৃদ্ধি-সহ নানা পরিকল্পনার কথা জানান মানস।

    আধিকারিকদের মতে, নগরায়ণ ও তার পরিকাঠামোর উন্নয়নের গতির মধ্যে সমন্বয় না করতে পারলে পরিষেবা ধাক্কা খাবে। তার প্রভাব কলকাতার আশপাশের খালগুলিতে পড়বেই। সঙ্গে জবরদখলের সমস্যা বাড়ছে। রাজ্য সরকারের দাবি, গত আর্থিক বছরের তুলনায় (২০২৪-’২৫) চলতি বছরে সেচ দফতরের বাজেট বৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৭৯ কোটি টাকা। আধিকারিকদের একাংশের মতে, ভোটমুখী ঘোষিত প্রকল্পগুলিতে বরাদ্দ যে হারে প্রতি বছর বেড়েছে, সেই তুলনায় খরচসাপেক্ষ প্রকল্পে বরাদ্দ তেমন বাড়েনি। রাজ্য সরকারের দাবি, বর্ষার পরে খালগুলির অবস্থার পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষার কাজ শুরু হবে। খাল সংলগ্ন পাম্পিং স্টেশনের ক্ষমতা বাড়ানোর কাজ চলছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)