হায়দরাবাদে বসবাস করছেন প্রায় ৯ লক্ষ বাঙালি। তথ্যপ্রযুক্তি থেকে শুরু করে ওষুধ নির্মাতা সংস্থা— চাকরির টানে এসেই তাঁরা আজ এই শহরে গড়ে তুলেছেন এক বৃহত্তর পরিবার। দুর্গাপুজোয় টানা ছুটি না-থাকার ফলে এ সময়ে দূর কলকাতায় যাওয়া সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই দুর্গোৎসব হয়ে উঠেছে প্রবাসীদের মিলনমেলা ও নস্টালজিয়ার কেন্দ্রবিন্দু।
এ বার সপ্তম বছরে পদার্পণ করছে প্রবাসী অ্যাসোসিয়েশন দুর্গোৎসব। উষ্ণতা, আতিথেয়তা, খিচুড়ি ভোগ, ধুনুচি নাচ, আরতির আয়োজন—সব মিলিয়ে এ পুজো ইতিমধ্যেই হায়দরাবাদের বাঙালি ও অবাঙালিদের কাছে বিশেষ প্রিয়। গত বছর কলকাতার বিখ্যাত ডেকার্স লেনের পুনর্নির্মাণে খাবার আর আড্ডার জমাটি সবার মন কেড়েছিল। সেই বিপুল সাড়ার পর এ বছর আসছেন আরও বেশি সংখ্যক রাঁধুনি, বাড়ছে মেনু।
প্রথমবারের মতো প্রবাসী দুর্গোৎসবের মঞ্চে আসছে বাংলার গর্ব, ইউনেস্কো স্বীকৃত পুরুলিয়ার ছৌ নৃত্য। ১৫ জন শিল্পী পরিবেশন করবেন ‘মহিষাসুরমর্দিনী’।
এ বার শহরে সবচেয়ে বড় মণ্ডপ করছে আলওয়ালের বাণী সংঘ। অন্য দিকে, ইতিহাস গড়ছে বাংলিয়া সাংস্কৃতিক সংঘ, যারা উদ্যাপন করছে তাদের ৬০তম দুর্গোৎসব।প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী উপলক্ষে থাকছে বিশাল আয়োজন।
উৎসব, ২০১২ সালে শুরু হওয়া এক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা, এ বছর উদযাপন করছে তাদের ১৩তম দুর্গোৎসব গাচিবাউলি স্টেডিয়ামে। হস্তশিল্প ও লোকসংস্কৃতি প্রচারে উৎসব বরাবরই এগিয়ে।
অন্য দিকে, জনপ্রিয়তা পাচ্ছে আগমনী। দ্বিতীয় বর্ষে তারা নিয়ে আসছে জমজমাট আয়োজন—সপ্তমীর সন্ধ্যায় ছৌ নৃত্য, অষ্টমীতে সঙ্গীতানুষ্ঠান, আর নবমীর রাতে থাকছে ডিজে ডান্ডিয়া নাইট ও ফ্যাশন শো। সবচেয়ে বড় কথা, সব অনুষ্ঠানেই প্রবেশ বিনামূল্যে।
ঢাকের তালে, উলুধ্বনিতে আর খিচুড়ি ভোগের ঘ্রাণে এবার হায়দরাবাদ মেতে উঠবে এক অনন্য আবেগে। এই শরতে শহরের আকাশে শারদোৎসবের রঙ আরও উজ্জ্বলহতে চলেছে।