বছর তিনেক আগে কলকাতায় যা প্রশংসা কুড়িয়েছিল, তাই বিতর্ক টেনে আনল ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচীতে!
রোমের ভ্যাটিকান সিটির আদলে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ তৈরি করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের রোষের মুখে পড়েছে রাঁচীর একটি ক্লাব। খ্রিস্টানদের গির্জার আদলে তৈরি ওই মণ্ডপে দুর্গাপুজো করা হলে হিন্দুদের ‘ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগবে’ বলে দাবি করে ইতিমধ্যেই আসরে নেমে পড়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, জনজাতি সুরক্ষা মঞ্চ-সহ আরএসএস-ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকটি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। যদিও এই সব দাবি খারিজ করে ওই পুজোর উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, কোনও ভাবেই হিন্দু ধর্মকে আঘাত করা তাঁদের উদ্দেশ্য নয়। হিন্দু ধর্মের সব রীতিনীতি মেনে এবং যাবতীয় ধর্মীয় আচার মেনেই দুর্গাপুজো করা হবে বলে জানিয়েছে পুজোটির উদ্যোক্তা আর আরস্পোর্টিং ক্লাব।
রাঁচীর রাতু রোডে এই পুজোর উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, এই মণ্ডপটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকা। পরিবেশ-বান্ধব উপকরণ দিয়ে তৈরি এই মণ্ডপটি ১০০ ফুট দীর্ঘ। এটি ৪৫ ফুট চওড়া করা হয়েছে, যাতে দর্শনার্থীদের যাতায়াতে কোনও সমস্যা না হয়। ৭০-৮০ জন শিল্পীর দীর্ঘদিনের পরিশ্রমে তৈরি মণ্ডপটি ইতিমধ্যেই গোটা শহরবাসীর নজর কেড়েছে। দুর্গাপুজোয় অন্যতম আকর্ষণ হয়ে ওঠা মণ্ডপটি ঘিরে প্রচুর খাবার এবং নরম পানীয়ের দোকানও বসেছে।
কিন্তু এতেই ঘোর আপত্তি হিন্দুত্ববাদীদের। তাদের অভিযোগ, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতৃত্ব এই ধরনের মণ্ডপ তৈরির অনুমতি দিয়ে হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করতে চাইছে। এই সব ক্ষেত্রে উৎসাহ দেওয়া হলে রাজ্য ধর্মান্তরণের হার বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে নানা মন্তব্য করতে শুরু করেছে সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি।
প্রসঙ্গত দুর্গাপুজোয় নানা ধরনের ভবনের আদলে মণ্ডপ তৈরি নতুন নয়। বরং বহু পুজোর উদ্যোক্তাই দর্শনার্থীদের কাছে এই ধরনের মণ্ডপ গড়ে প্রশংসা কুড়োন। বছর তিনেক আগেই কলকাতার উত্তর শহরতলির একটি প্রথম সারির ক্লাব একই রকম মণ্ডপ তৈরি করে নজর কেড়েছিল। প্রায় প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, দেশের নানা প্রান্তেই বিভিন্ন দর্শনীয় ভবনের আদলে মণ্ডপ তৈরি হয়। এর আগে এ ধরনের কোনও বিতর্কের কথা মনে করতে পারছেন না কেউই।