• বেঙ্গালুরুতে শাড়ি চুরির অভিযোগে মহিলাকে প্রকাশ্যে মারধর, ছবি দেখে সর্বত্র শোরগোল...
    আজকাল | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেঙ্গালুরুর এভিনিউ রোডে ঘটল চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এক মহিলা শাড়ি চুরির অভিযোগে দোকানদার ও তার সহকারীর হাতে প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হন। ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এবং তা ঘিরে তৈরি হয়েছে তীব্র আলোড়ন।

    পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত মহিলার নাম হুম্পাম্মা। তিনি রবিবার দুপুরে এভিনিউ রোডের একটি শাড়ির দোকানে প্রবেশ করেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দোকানের ভেতরে দাঁড়িয়ে তিনি বারবার শাড়ির গোছা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বেশ কিছু সময় চেষ্টা করার পর অবশেষে তিনি প্রায় ৯০ হাজার টাকার শাড়ির একটি গোছা নিয়ে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হন। তবে এখানেই শেষ নয়। কিছুক্ষণ পরে ওই মহিলা আবার একই দোকানে ফিরে আসেন। মনে করা হচ্ছে, তিনি আরও শাড়ি চুরির চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এবার দোকানদার তাকে চিনে ফেলেন এবং হাতেনাতে ধরে ফেলেন।

    দোকানদার ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং মহিলাকে টেনে হিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে আসেন। প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে তিনি মহিলাকে বারবার থাপ্পড় ও লাথি মারেন। দোকানের সহকারীও ওই সময় উপস্থিত ছিলেন এবং মারধরে জড়িত হন বলে অভিযোগ।

    পাশে দাঁড়ানো পথচারীরা কেউ কেউ চুপচাপ দেখলেও অনেকে মোবাইলে এই ভয়ঙ্কর দৃশ্য ধারণ করেন। পরবর্তীতে সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ঘটনাটি নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

    ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর হুম্পাম্মাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়। একইসঙ্গে দোকানদার এবং তার সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয় মহিলাকে প্রকাশ্যে মারধরের অভিযোগে।

    পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে—একটি মহিলার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে এবং অপরটি দোকানদার ও তার সহকারীর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে।

    তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, “যদিও চুরির অভিযোগে মহিলার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তবে কাউকে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার নেই। মহিলাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে দোকানদারও অপরাধ করেছেন।” পুলিশ তিন অভিযুক্তকেই আদালতে পেশ করলে বিচারক তাদের  হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফলে চোরাই অভিযোগে অভিযুক্ত মহিলা এবং মারধরের অভিযোগে দোকানদার ও তার সহকারী—তিনজনই এখন জেলে রয়েছেন।

    এই ঘটনার পর সকলের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। কেউ কেউ বলছেন, বারবার চুরি হওয়ায় দোকানদারের ধৈর্যচ্যুতি ঘটেছিল, তাই তাৎক্ষণিক আবেগে এমন ঘটনা ঘটে। তবে অধিকাংশ মানুষই বলছেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সোশ্যাল মিডিয়াতেও একই সুর—“চুরি অপরাধ হলেও প্রকাশ্যে এভাবে মারধর করা অন্যায়।”

    বেঙ্গালুরুর এই ঘটনা শুধু একটি চুরির মামলা নয়, বরং আইন-শৃঙ্খলা ও নাগরিক দায়িত্ববোধের প্রশ্নও উত্থাপন করেছে। পুলিশ ও আদালতের কঠোর পদক্ষেপে বার্তা স্পষ্ট—চুরি হোক বা রাগ, আইনের শাসনের বাইরে গিয়ে কেউই শাস্তি এড়াতে পারবে না।
  • Link to this news (আজকাল)