যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত হস্টেল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত হস্টেল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। শুক্রবার এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, পুজোর ছুটির সময়ে যাতে কোনও বহিরাগত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ না করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। প্রয়োজনে পুলিশের সাহায্য নিতে বলা হয়েছে।
পুজোর ছুটির পরে রাজ্য সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে যৌথভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহ যাবতীয় প্রশাসনিক বিষয়ে আলোচনায় বসার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই বৈঠকে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো, ক্যাম্পাস নজরদারি, প্রবেশপথে কড়া নজরদারি, সব কিছুর চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করতে হবে। এরপর ওই বৈঠকের রিপোর্ট পরবর্তী শুনানিতে জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত। হাই কোর্ট এ-ও জানিয়ে দিয়েছে, পুজোর ছুটির পরে হস্টেলগুলি ফের খোলা যাবে।
গত ২ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বিক্ষোভ এতটাই চরমে পৌঁছায় যে, শিক্ষামন্ত্রী আহত হন এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। একই ঘটনায় দুই পড়ুয়াও আহত হন, একজন চোখে, অপরজন পায়ে চোট পান। এই ঘটনার পর থেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উঠতে শুরু করে প্রশ্ন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেই মামলারই ধারাবাহিক শুনানিতে আদালত প্রথমে নির্দেশ দেয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও অনুষ্ঠান বা সেমিনারে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো যাবে না। এবার সেই মামলার শুনানিতেই হাইকোর্ট হস্টেল বন্ধের নির্দেশ দিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঢেলে সাজানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে আদালত স্পষ্ট করেছে, যে কোনও মূল্যে ক্যাম্পাসের ভিতরে অনুপ্রবেশ, হিংসা এবং বিশৃঙ্খলা রুখতে হবে। সিসিটিভি বসানো, নিরাপত্তারক্ষীদের সংখ্যা বাড়ানো এবং প্রবেশের ক্ষেত্রে কঠোর পরিচয় যাচাইয়ের মতো ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত হস্টেল বন্ধ থাকবে পুজোর ছুটি অবধি। ছুটি শেষে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পুনরায় হস্টেল খুলে দেওয়া হবে।