‘স্রেফ দেশের শক্তি নয়, ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের প্রমাণ’, মিগের ‘ফেয়ারওয়েলে’ বার্তা রাজনাথের
প্রতিদিন | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৬০ বছর ধরে দেশের অন্যতম অস্ত্র ছিল মিগ-২১। এবার বৃদ্ধ হয়ে অবসরে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ থেকে বালাকোট অপারেশনের সাক্ষী এই যুদ্ধবিমান। শুক্রবার থেকে সরকারিভাবে মিগের কার্যকাল শেষ হল। মিগের বিদায়বেলায় আবেগঘন অথচ অত্যন্ত ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সাফ জানালেন, স্রেফ দেশের শক্তি নয়, মিগ ছিল ভারত-রাশিয়া সম্পর্কে গভীরতার প্রমাণ।
ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে ৯০০টি মিগ-২১ ছিল। যার মধ্যে ৬৬০টি ভারতে নির্মিত। দশকের পর দশক ধরে এই যুদ্ধবিমানগুলিই দেশরক্ষার কাজ করেছে। বিভিন্ন সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে মোট ৮৭৪টি মিগ-২১ কিনেছে ভারত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্ব ভূমিকা ছিল এই মিগ ২১ যুদ্ধবিমানের। বালাকোটে আকাশপথে হামলা চালানোর ক্ষেত্রেও শামিল হয় মিগ ২১।
তবে শেষের দিকে ‘উড়ন্ত কফিন’ নামে চিহ্নিত হয় এই যুদ্ধবিমান। পরিসংখ্যান বলছে, গত ৬০ বছরে ভারতীয় বায়ুসেনার প্রায় ৪০০টি মিগ-২১ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। যাতে মৃত্যু হয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার প্রায় ২০০ জন পাইলটের। ৬০ জনের বেশি সাধারণ নাগরিকেরও প্রাণ গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার অবসরে পাঠানো হল মিগ ২১কে। জমজমাট এয়ার শো’র আয়োজন করা হয় যুদ্ধবিমানকে বিদায় জানাতে। বায়ুসেনা আধিকারিক ছাড়াও মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা হাজির ছিলেন বিদায় সংবর্ধনায়।
মিগকে বিদায় জানানোর দিনে পুরনো স্মৃতি ফিরে দেখেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তাঁর কথায়, “যখনই আমরা কোনও ঐতিহাসিক মিশনে গিয়েছি, তখনই তেরঙ্গার গৌরব আরও বাড়িয়ে তুলেছে মিগ। দীর্ঘ ৬ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিগের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল সাহস, ত্যাগ এবং দেশের গর্ব। একটা যুদ্ধ বা একটা অপারেশন নয়, দীর্ঘদিন ধরে মিগ ইতিহাসের সাক্ষী থেকেছে। কেবল একটা মেশিন বা একটা যুদ্ধবিমান নয়, আসলে ভারত এবং রাশিয়ার গভীর বন্ধুত্বের প্রমাণ ছিল এই মিগ।” সাম্প্রতিক অতীতে আমেরিকার চোখরাঙানি উপেক্ষা করে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা অনেকটাই বাড়িয়েছে ভারত। সেই প্রেক্ষিতে রাজনাথের এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।